বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) বার্ষিক কর্মশালায় এইচ-ইনডেক্স মানের ভিত্তিতে ১৭ জন গবেষককে ‘গ্লোবাল রিসার্চ ইমপ্যাক্ট রিকগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ প্রদান করা হয়।

এ বছরের অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের সনদে অ্যাওয়ার্ডের নামেই বানান ভুল করে রেখেছে বাউরেস কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, সম্মাননা স্মারকেও ‘সায়েন্টিফিক’ শব্দের বানানে ভুল রয়েছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে দেখা যায়, সনদে ‘ইম্প্যাক্ট’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইম্পার্ট’ লেখা হয়েছে, যা অ্যাওয়ার্ডের অর্থকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে। এছাড়াও, গবেষকদের স্মারকে ‘সায়েন্টিফিক’ শব্দের বানান ভুল করে রাখা হয়েছে ‘সিন্টিফিক’। এমন গুরুতর ভুল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের একাংশ বলছেন, একটি সম্মানজনক পুরস্কারের ক্ষেত্রে এমন ভুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতি ও অপেশাদারিত্বের পরিচয় বহন করে। তারা মনে করেন, অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তির বিষয়টি যেমন গবেষকদের জন্য আবেগের, তেমনি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির সঙ্গেও জড়িত। কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল ও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।

এ বিষয়ে বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড.

মো. হাম্মাদুর রহমান বলেন, ‘এটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রিন্টিং মিস্টেক। ভুল তো ভুলই, এর কোন ব্যাখ্যা নেই। আমরা বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্যে ছিলাম। তাই এ ভুল চোখে পড়েনি। তবে ভুলের জন্য আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ