ফের ১২৫ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র
Published: 17th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিমান তৃতীয় দফায় ১১২ অবৈধ অভিবাসীকে নিয়ে ভারতে পৌঁছেছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ৩ মিনিটে পাঞ্জাব প্রদেশের অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমানটি। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এসব ভারতীয় অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। গত ১০ দিনের মধ্যে তৃতীয় দফার প্রত্যাবাসন এটি। এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি ১১৯ জন এবং ৫ ফেব্রুয়ারি ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র অনুযায়ী, মার্কিন বিমান বাহিনীর সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমানে করে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। ফেরত আসা ১১২ অভিবাসীর মধ্যে ৩১ জন পাঞ্জাবের, ৪৪ জন হরিয়ানার, ৩৩ জন গুজরাটের, ২ জন উত্তর প্রদেশের, একজন হিমাচল প্রদেশের এবং একজন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা।
তাদের মধ্যে অনেকের পরিবার বিমানবন্দরে তাদের গ্রহণ করতে এসেছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর তাদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে। এই অভিবাসীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে, সূত্র জানায়।
প্রথম ও দ্বিতীয় দফার প্রত্যাবাসনের সময় অভিবাসীদের বিমান যাত্রার পুরো সময় শেকল ও হাতকড়া পড়িয়ে বন্দি রাখা হয়েছিল এবং ভারতে পৌঁছানোর পর তাদের মুক্ত করা হয়।
এ নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং সংসদের বাজেট অধিবেশনে তুমুল বিতর্ক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে মেক্সিকো ও এল সালভাদরের পর ভারত তৃতীয় বৃহত্তম অবৈধ অভিবাসী প্রেরণকারী দেশ।
পাঞ্জাবের বেশিরভাগ অভিবাসী জানিয়েছেন, তারা ভালো জীবনের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সীমান্তে ধরা পড়ার পর তাদের স্বপ্ন ভেঙে যায় এবং হাতকড়া পরিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
এনজে
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।