৩০ হাজারে শুরু, আর কে হান্নানের ব্যবসা এখন অর্ধকোটি টাকার
Published: 17th, February 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠীরা যে সময়ে শুধু পড়ালেখায় ব্যস্ত থাকতেন, তখন পড়াশোনার পাশাপাশি ই–কমার্স ওয়েবসাইটে চামড়ার তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতেন আর কে হান্নান। বিভিন্ন জায়গা থেকে চামড়াপণ্য সংগ্রহ করে তা অনলাইনে বিক্রি করতেন তিনি। এ কাজ করতে করতে একসময় নিজেই কারখানা দিয়ে চামড়ার জ্যাকেট তৈরি করতে শুরু করেন। মাত্র ৩০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করা সেই উদ্যোগ এখন প্রায় অর্ধকোটি টাকার ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে।
আর কে হান্নানের প্রতিষ্ঠানের নাম র্যাভেন। সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরে র্যাভেনের একটি বিক্রয়কেন্দ্রে তাঁর সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। আলাপচারিতায় তিনি উদ্যোক্তা জীবনের নানা গল্প, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
আর কে হান্নান জানান, ছোটবেলা থেকেই তাঁর ইচ্ছে ছিল ব্যবসা করবেন। এ জন্য কর্মমুখী শিক্ষা পাওয়া যাবে, এমন বিষয়েই পড়তে চাইতেন তিনি। যদিও বাবা–মা চাইতেন ছেলে সরকারি চাকরি করবে। যা–ই হোক, উচ্চমাধ্যমিক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন তিনি। মূলত এর মধ্য দিয়েই তাঁর জীবনের বাঁকবদল হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালে ২০১০ সালে তিনি নিজে একটি ই–কমার্স ওয়েবসাইট বানান। এরপর রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে বিভিন্ন চামড়াপণ্য এনে সে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতেন। অনলাইনে এসব পণ্যের জন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পান। আবার অনেক ক্রেতা কাস্টমাইজড অর্থাৎ, তাঁদের বিশেষ চাহিদা বা পছন্দ অনুযায়ীও পণ্য চাইতেন। সেগুলোও হাজারীবাগের চামড়া কারখানা থেকে বানিয়ে এনে দিতেন হান্নান। এভাবেই চলে তিন বছর। ২০১৪ সালে হান্নানের স্নাতক শেষ হয়। এবার নিজেই চামড়ার পণ্য তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু করেন তিনি। তবে কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। কারণ, মোটামুটি মানের কারখানা করতেও প্রয়োজন ছিল অন্তত ৫ লাখ টাকা। কিন্তু এত টাকা জোগাড় করা তাঁর জন্য কষ্টকর ছিল। তাই ছোট পরিসরে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নেন তিনি।
শুরুতেই হাজারীবাগ এলাকা থেকে একজন কারিগর নিয়োগ করেন, যিনি চামড়ার জ্যাকেট বানাতে দক্ষ। তাঁর সঙ্গে নেন একজন সহকারী। তাঁদের সঙ্গে চুক্তি ছিল—বিক্রি হলে বেতন পাবেন, না হলে নয়। এরপর একজন নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে মাত্র ৩০ হাজার টাকা ধার নিয়ে রাজধানীর লালকুঠি এলাকায় ছোট্ট একটি ভাড়া দোকানে পণ্য তৈরি শুরু হয়। পণ্যের চাহিদা বাড়ায় এক বছরের মধ্যেই ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন হান্নান।
আর কে হান্নান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।