মেধা সম্পদ সুরক্ষায় পেটেন্ট নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব।

সোমবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (আইপিআর) নিশ্চিতকরণ’ সংক্রান্ত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ইউজিসির স্ট্র্যাটেজিক প্লানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স (এসপিকিউএ) ডিভিশনের পরিচালক ড.

দূর্গা রানী সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম ও ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে প্রফেসর মাছুমা হাবিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উদ্ভাবনী ধারণা ও মেধা সম্পদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইউজিসি একটি সেল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে আইনজীবী পুল গঠন করে দ্রুততম সময়ে পেটেন্ট নিবন্ধনে সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি শক্তিশালী মেধাস্বত্ব অধিকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেটেন্ট নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা জরুরি বলে জানান। 

তিনি বলেন, সৃজনশীল কাজ, উদ্ভাবন এবং অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক আবিষ্কারের জন্য আইনি অধিকারের স্বীকৃতি হচ্ছে আইপিআর। উন্নত বিশ্বে এটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে জটিল প্রক্রিয়ার কারণে এটি তেমন জনপ্রিয় হচ্ছে না। ইউজিসি আইপিআরকে সংশ্লিষ্টদের মাঝে জনপ্রিয় করতে ধারাবাহিকভাবে সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজন করছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর রেজাউল করিম বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইম্প্যাক্টফুল গবেষণা হচ্ছে। পেটেন্ট রেজিস্ট্রেশনের জটিলতার কারণে এসব গবেষণার মেধাস্বত্ব অধিকার থেকে শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। ইউজিসির এ উদ্যোগ আইপিআর নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উৎসাহিত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আইপিআর এর কোনো বিকল্প নেই। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে তিনি আইপিআর পেটেন্ট রেজিস্ট্রেশনে আগ্রহী হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

কর্মশালায় টেকনিক্যাল সেশনে পেটেন্ট নিবন্ধন বিষয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ইউজিসির এসপিকিউএ ডিভিশনের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনির উল্লাহ এবং পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান।

কর্মশালায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউজ স ইউজ স র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে

খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।

ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।

হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় না

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।

খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।

কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’

পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ