তুরস্কের সরকারি বৃত্তির কেতাবী নাম তুর্কিয়ে বুরস্‌লারি। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য দেওয়া হয় এ বৃত্তি। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। তুরস্ক বিশ্ববাসীর কাছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য অন্যতম পরিচিত একটি দেশ। ইউরোপ ও এশিয়ায় অবস্থিত সমৃদ্ধ দেশটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরণের বৃত্তি দেয়।

বায়োটেকনোলজি, বিভিন্ন প্রকৌশল ক্ষেত্র (কম্পিউটার, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ), বায়োকেমিস্ট্রি, জীববিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, খাদ্য প্রকৌশল, গণিত, মেডিসিনসহ হাজারের বেশি প্রোগ্রামে পড়ার সুযোগ মেলে তুরস্ক সরকারের এই বৃত্তিতে। ২০২৫–২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য তুরস্ক সরকারের এই বৃত্তিটি মেধাবী বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দেয়। এই বৃত্তির আওতায় মাসিক উপবৃত্তি, ফ্রি টিউশন ফি, যাতায়াতের বিমান টিকিট, স্বাস্থ্যবিমা, বাসস্থানসহ বিভিন্ন খরচ বহন করে তুরস্ক সরকার।

আরও পড়ুনরোমানিয়ায় বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা, সুযোগ-সুবিধা ও আবেদনের পদ্ধতি জেনে নিন১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বৃত্তির সুবিধা—

ফ্রি টিউশন ফি

মাসিক উপবৃত্তি

স্বাস্থ্যবিমা

বাসস্থান

যাওয়াতের বিমান টিকিট

এক বছরের তুর্কি ভাষাশিক্ষা কোর্স

মাসিক উপবৃত্তির পরিমাণ—

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট: প্রতি মাসে ৭০০ তুর্কি লিরা

মাস্টার্স: প্রতি মাসে ৯৫০ তুর্কি লিরা

পিএইচডি: প্রতি মাসে ১ হাজার ৪০০ তুর্কি লিরা

গবেষণার জন্য: প্রতি মাসে ৩ হাজার তুর্কি লিরা

আরও পড়ুনবাংলাদেশিদের হার্ভার্ডে বৃত্তি নিয়ে এমবিএ করার সুযোগ২৮ মার্চ ২০২১বৃত্তিতে আবেদনের যোগ্যতা—

ভাষা: ইংরেজি বা তুর্কি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে

জাতীয়তা: তুর্কি নাগরিক বা যাঁরা তুর্কি নাগরিকত্ব হারিয়েছেন, তাঁরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এ ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের নাগরিকেরা আবেদন করতে পারবেন। তুরস্কের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কোনো শিক্ষার্থী এই বৃত্তির জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

আরও পড়ুনবাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যে ১০ দেশে অল্প খরচে পড়তে পারেন০৭ এপ্রিল ২০২৪প্রোগ্রামের সময়কাল

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট: ৪–৬ বছর

মাস্টার্স: ২ বছর

পিএইচডি: ৪ বছর

একাডেমিক স্কোর

স্নাতক: ন্যূনতম ৭০%

মাস্টার্স এবং ডক্টরেট: ন্যূনতম ৭৫%

স্বাস্থ্যবিজ্ঞান (মেডিসিন, ডেন্টিস্ট্রি ও ফার্মেসি): ন্যূনতম ৯০%

আবেদনের বয়সসীমা—

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট: ২১ বছরের কম

মাস্টার্স: ৩০ বছরের কম

ডক্টরেট: ৩৫ বছরের কম

রিসার্চ: ৪৫ বছরের কম

আরও পড়ুনউচ্চশিক্ষায় বিদেশে যেতে প্রস্তুতি কেমন, জেনে নিন ধাপগুলো১৪ এপ্রিল ২০২৪আবেদনে যা যা লাগবে—

বৈধ পাসপোর্ট

সাম্প্রতিক সময়ে তোলা আবেদনকারীর একটি ছবি

জাতীয় পরীক্ষার ফলাফল (যদি থাকে)

ডিপ্লোমা অথবা অস্থায়ী পরীক্ষার সার্টিফিকেট

ট্রান্সক্রিপ্ট

*আন্তর্জাতিক পরীক্ষার ফলাফল (GRE, GMAT, SAT ইত্যাদি) যুক্ত করতে হবে যদি নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চেয়ে থাকে।

প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভাষাগত দক্ষতার (TOEFL, DELF) সনদ।

পিএইচডি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে একটি গবেষণার প্রপোজাল এবং প্রার্থী ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন, এমন একটি গবেষণার প্রমাণ দাখিল করতে হবে।

বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি যেভাবে প্রস্তুতি নিলে—

সময়ের আগেই শুরু করুন: আবেদনের সময়সীমার অপেক্ষায় না থেকে আগেভাগেই আপনার আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা শুরু করুন। আপনি যে বিষয়ে পড়তে চান, তার জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভালো হবে, কী কী লাগবে, এসব আগেই তৈরি করতে থাকুন।

যথার্থ কাগজপত্র: নিশ্চিত করুন যে আপনার সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপ-টু-ডেট আছে এবং সেগুলো এমনভাবে সাজান, যাতে আপনার একাডেমিক সাফল্যগুলো সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়।

শক্তিশালী স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP): একটি শক্তিশালী এসওপি (SOP) বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।

শারীরিক যোগ্যতা: তুরস্কের সরকারি বৃত্তির জন্য সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেভাবেই প্রস্তুতি নিন।

আবেদনের শেষ তারিখ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আবেদনের বিস্তারিত তথ্যে ও আবেদনের পদ্ধতি জানতে ক্লিক করুন এখানে

আরও পড়ুনচীনে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপের সঙ্গে আছে পড়ার শেষে চাকরি ও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ২৬ আগস্ট ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ত ত র জন য এই ব ত ত উপব ত ত প এইচড সরক র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা

জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।

হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—

১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

আবেদনে যোগ্যতার শর্ত

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—

—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।

—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।

—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।

বয়সসীমা

—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।

—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।

—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।

—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।

বৃত্তির সুবিধা

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:

১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।

২। মাসিক ভাতা।

—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।

—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।

—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।

—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।

—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।

—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।

—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা