সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 19th, February 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও তাঁর স্ত্রী ফিরোজা পারভীনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৮ কোটি ৮৬ লাখ ১১ হাজার ৪২৫ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁর নামে থাকা ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
আক্তার হোসেন আরও বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৩ কোটি ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রেজাউল করিমের স্ত্রী ফিরোজা পারভীনের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। স্বামীর অবৈধ আয়কে বৈধ করতে তিনি সহযোগিতা করেছেন। এ মামলায় রেজাউল করিমকেও আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে রেজাউল করিমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ দেন আদালত।
দুদকের ওই আবেদনে বলা হয়, রেজাউল করিম ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। সাবেক মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে পিরোজপুরের নাজিরপুর ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে কোটি কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। দুদকে এসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান।
গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন শ ম রেজাউল করিম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।