মানুষকে বশ করে তার কাছ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ‘শয়তানের নিশ্বাস’ ব্যবহার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, অপরাধীরা নিজেরা মাস্ক পরে থাকে। আর স্কোপোলামিন মাখানো ভিজিটিং কার্ড, কাগজ, মুঠোফোন মানুষের নাকের কাছাকাছি নিয়ে যায়, মুহূর্তে আক্রান্ত ব্যক্তি হিপনোটাইজ বা সম্মোহিত হয়ে যান। এর ফলে সম্মোহিত ব্যক্তির কি কি ক্ষতি হয় এবিষয়ে রাইজিংবিডিকে বিস্তারিত জানিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মরত ডা.

মাসুদা পারভীন মিনু।

তিনি বলেন, ‘‘স্কোপোলামিন যা ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামে কুখ্যাত একটি শক্তিশালী মাদক যা মূলত ডাটুরা (Datura) এবং ব্রুগমানসিয়া  (Brugmansia) গাছ থেকে পাওয়া যায়। এটি এক প্রকার ট্রোপেন অ্যালকালয়েড, যা স্নায়ুতন্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসাশাস্ত্রে এটি মোশন সিকনেস, মাংসপেশির খিঁচুনি ও কিছু স্নায়ুবিক ব্যাধির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, তবে অপরাধ জগতে এটি এক ভয়ঙ্কর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। স্কোপোলামিন মস্তিষ্কের অ্যাসিটাইলকোলিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে। এটি মস্তিষ্কের সেই অংশকে প্রভাবিত করে, যা স্মৃতি, বিচার-বুদ্ধি এবং আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ভুক্তভোগী পুরোপুরি সচেতন থাকলেও তিনি নিজের কাজের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না এবং সহজেই অন্যের প্রভাবের অধীনে চলে যান।বিশেষ করে অপরাধীরা এটি ধুলোর মতো ছড়িয়ে দিয়ে, পানীয় বা খাবারের সাথে মিশিয়ে ব্যক্তিকে অজ্ঞান বা বশীভূত করে থাকে। ভুক্তভোগী নিজের জ্ঞান হারান না, তবে তার কার্যক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সে সহজেই ব্যাংকের পিন কোড বলে দিতে পারেন বা নিজের ঘরের দরজা খুলে দিতে পারেন—কিন্তু পরে কিছুই মনে থাকে না।’’

স্কোপোলামিন বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’ গ্রহণের পর শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে

আরো পড়ুন:

টাকা হাতে আসলেই খরচ হয়ে যায়? ‘কাকিবো’ পদ্ধতিতে টাকা জমান

অনলাইন ডেটিংয়ে নারী নাকি পুরুষ এগিয়ে

স্মৃতিভ্রংশ: ব্যক্তি সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে ঘটনার স্মৃতি হারাতে পারে।

অবচেতন অবস্থা: ব্যক্তি ঘুমিয়ে পড়তে পারে বা সম্পূর্ণ অনুগত হয়ে যায়।

মানসিক বিভ্রান্তি: ব্যক্তি বাস্তবতা ও কল্পনার মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না। এটি একজন মানুষের স্মতিশক্তি সাময়িক ভাবে বা সম্পূর্ণ ভাবে অকেজো  করে দিতে পারে।

এটি মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিহীনতা এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এর ব্যবহার স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতা তৈরি করতে পারে, যা কখনও কখনও প্রাণঘাতীও হতে পারে।


‘শয়তানের নিশ্বাস’ থেকে  বাঁচার উপায় সম্পর্কে ডা. মাসুদা পারভীন মিনুর পরামর্শ —

জ্ঞান বৃদ্ধি: সাধারণ মানুষকে স্কোপোলামিনের প্রভাব এবং ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে সচেতন করা।

আইনগত পদক্ষেপ: মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা।

সমাজে আলোচনা: মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ভয়াবহতা সম্পর্কে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা ও কর্মসূচি গ্রহণ করা।

স্কোপোলামিন বা শয়তানের নিশ্বাস একটি ভয়াবহ মাদক, যা মানুষের জীবন ধ্বংস করতে পারে। তাই, এর ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শয়ত ন র ন শ ব স ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার জিসানের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্থানীয়রা ফুটবলে জিসানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ বলে ডাকেন। 

তারেক রহমানের পক্ষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জিসানের গ্রামের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিসানের বাবা ও এলাকাবাসীকে এ খবরটি জানিয়ে আসেন।

উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের অটোরিকশাচালক জজ মিয়ার ছেলে জিসান। মাত্র ১০ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলারের অসাধারণ দক্ষতার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। স্থানীয় চর ঝাকালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সে। 

কখনও এক পায়ে, কখনও দু’পায়ে, কখনও পিঠে ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে জিসান। দেখে মনে হবে, ফুটবল যেনো তার কথা শুনছে। এসব কসরতের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

অনলাইনে জিসানের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন তারেক রহমান। তিনি জিসানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে জিসানের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। 

জিসানকে উপহার হিসেবে বুট, জার্সি ও ফুটবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেন তিনি। এছাড়া জিসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।

জিসানের ফুটবল খেলা নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ আমিনুল হক বলেন, “জিসান ফুটবলে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। তারেক রহমান জিসানের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিমাসে জিসানের লেখাপড়া, ফুটবল প্রশিক্ষণ ও পরিবারের ব্যয়ভারের জন্য টাকা পাঠানো হবে।”

জিসান জানায়, মোবাইলে ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর খেলা দেখে নিজেই ফুটবলের নানা কৌশল শিখেছে। নিজ চেষ্টায় সে এসব রপ্ত করেছে।

জিসানের বাবা জজ মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন না একদিন কেউ না কেউ আমার ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আজ আমার সেই বিশ্বাস পূর্ণ হয়েছে।”

ঢাকা/রুমন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর  করতে ডায়েটে যে পরিবর্তন আনতে পারেন
  • অনুষ্ঠান করে স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন স্বামী
  • ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান