কৃষি খাত সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হলো না কেন, প্রশ্ন আলোচকদের
Published: 23rd, February 2025 GMT
দেশের ৫৬ শতাংশ কৃষক ভূমিহীন হলেও অন্তর্বর্তী সরকার তাঁদের কথা ভাবছে না। অথচ এই গণ-অভ্যুত্থানে কৃষকের ছেলেমেয়েরা প্রাণ দিয়েছেন। তাঁরা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাহলে কৃষকেরা প্রাপ্য অধিকার পাচ্ছেন না কেন? কৃষি খাত সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হলো না কেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কৃষক সম্মেলনে।
আজ রোববার রংপুর টাউন হলের সামনে ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আলোচকেরা অভিযোগ করেন, আলুর দাম না পাওয়ায় কৃষকদের আন্দোলনে নামতে হচ্ছে। খরচ বেশি হওয়ার জন্য হিমাগারে ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এগুলো সরকারের অবহেলা ও একধরনের নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে হচ্ছে।
কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, সার, বীজ, কীটনাশকসহ সব কৃষি উপকরণ রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎপাদন, বিপণন, কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন, বন্ধ শিল্প চালুসহ কৃষি খাত সংস্কারের দাবিতে দিনব্যাপী এই কৃষক সম্মেলনে ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট, বগুড়া, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের কয়েক শ নারী-পুরুষ অংশ নেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর ঢাকায় যেসব সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে কৃষকের কথা শোনার মতো কেউ নেই। একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে টেকসই উন্নয়নসংক্রান্ত। সেই টাস্কফোর্সে প্রতিবেদন ইংরেজি ভাষায় দেওয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো এই প্রতিবেদন কি কৃষকেরা পড়তে পারবেন? এর মানে হলো শহরকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীরা কৃষকদের থেকে অনেক দূরে বাস করেন। কৃষকের যে যন্ত্রণা, তাঁর কষ্ট, বঞ্চনা—এগুলো এসব রিপোর্টে আসে না।’
রংপুরে টাউন হলের সামনের মাঠে ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের আয়োজনে কৃষক সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লোকজন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে
খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।
হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় নাসম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।
খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’
পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা