রেলপথ অবরোধে ছয় ঘণ্টা বন্ধ ট্রেন চলাচল
Published: 24th, February 2025 GMT
কালিয়াকৈরে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার এ কর্মসূচিতে জয়দেবপুর-রাজশাহী রুটে ছয় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। ইউএনও কাউছার আহামেদের চেষ্টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের দাবিতে কালিয়াকৈর হাইটেক সিটি রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন। সকাল ৯টার দিকে কর্মসূচি শুরু করেন তারা। ছয় ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের কথা জানায় সরকার। এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের দাবিতে তারা কর্মসূচি পালন করছেন। কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিলেও নাম পরিবর্তন করা হয়নি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি না মানলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে। মাসুরা জাহান, রায়হান আলী, তানজিম আলমসহ কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষকে দাবি জানালেও তারা ব্যবস্থা নেননি। অবরোধের এক পর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে ইউএনও যোগাযোগ করেন।
হাইটেক সিটি রেলস্টেশনের মাস্টার খাইরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা চলে গেলে ট্রেন চলাচল স্বাবাভিক হয়। উভয় পাশে ছয়টি ট্রেন শত শত যাত্রী নিয়ে আটকে ছিল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড জ ট ল ইউন ভ র স ট অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী