ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতিসহ নতুন ট্রেনের দাবিতে রেলপথ অবরোধ
Published: 28th, February 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে একটি বিশেষ ট্রেন চালু, কয়েকটি আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি, ট্রেনের আসন বাড়ানোসহ কালোবাজারি বন্ধের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলপথ অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায় সম্মিলিত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে সাধারণ মানুষ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দাবিগুলোর বিষয়ে জেলা নাগরিক ফোরাম সাত বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে। সদ্য গঠিত সম্মিলিত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে আজ সোয়া ১০টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন সাধারণ মানুষ। এ সময় তাঁদের সঙ্গে জেলা সদরের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
অবরোধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে কোনো ট্রেন না থাকলেও ঢাকাগামী আন্তনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস জেলার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) প্রশাসনের লোকজন। দাবি মানার আশ্বাস পেয়ে জেলার বিক্ষুব্ধ লোকজন অবরোধ তুলে নেন।
অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মোবারক হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম মোমিনুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম, জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য এবং কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম খান প্রমুখ। এ সময় বক্তারা বলেন, রাজস্ব আয়ের দিক থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এখান থেকে ছয়-সাত হাজার যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। কিন্তু এত পরিমাণ যাত্রীর তুলনায় টিকিট সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। তাই দ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে নতুন একটি ট্রেন চালু ও আন্তনগর উপবন, বিজয় ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং টিকিট কালোবাজারি বন্ধের দাবি জানান বক্তারা। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে চলাচলকারী তিতাস কমিউটার ট্রেনের বিদ্যমান পুরোনো বগিগুলো সরিয়ে নতুন বগি সংযোজনেরও দাবি জানান তাঁরা।
অবরোধে অংশ নেওয়া জেলার সাধারণ লোকজন জানান, দেশের পূর্বাঞ্চলের রেলপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন। যেখান থেকে সরকার প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের রাজস্ব পেয়ে থাকে। কিন্তু সেই বিবেচনায় যাত্রীসেবার মান বাড়েনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে চলাচলের জন্য যে পরিমাণ ট্রেন যাত্রাবিরতি করছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। গত সরকারের সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিভিন্ন ট্রেনের অনেক আসন কেটে নেওয়া হয়। এতে জেলাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাঁরা বলেন, জেলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আন্তনগর ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষ কেবল আশ্বাসেই দিন অতিবাহিত করেছে। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের রেলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি হাতে নিতে হয়েছে। তাঁরা আরও জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না এলে আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় র লপথ অবর ধ ব র হ মণব ড
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজারে নতুন ট্রেন চালুসহ ৮ দাবিতে অবরোধ-বিক্ষোভ
সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশন স্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি চলছে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচি বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বেলা পৌনে একটা পর্যন্ত কোনো ট্রেন স্টেশনটিতে পৌঁছায়নি।
আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গেছে, কর্মসূচি সফল করতে সকাল থেকেই লোকজন লাল পতাকা হাতে নিয়ে কুলাউড়া রেলস্টেশনে জড়ো হতে থাকেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যোগ দেন তাঁরা।
এ সময় কুলাউড়ায় আট দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবেদ রাজা, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী সাহেদ আলীসহ অনেকে।
একপর্যায়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা জানান। তিনি বলেন, ‘সিলেট বিভাগ রেল, সড়ক যোগাযোগসহ নানা ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে কুলাউড়ার পাশাপাশি সিলেটের মানুষও জেগে উঠেছেন। রেলের আট দফা দাবি যৌক্তিক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়া যাবে না।’
আট দফা দাবিগুলো হলো—ঢাকা-সিলেট রেলপথে অনুমোদিত টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস দ্রুত চালুসহ সিলেট-ঢাকা, সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ; আখাউড়া-সিলেট সেকশনে একটি লোকাল ট্রেন চালু; আখাউড়া-সিলেট সেকশনে সব বন্ধ স্টেশন চালু; কুলাউড়া জংশন ও শ্রীমঙ্গল স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসনসংখ্যা বৃদ্ধি; সিলেট-ঢাকাগামী আন্তনগর কালনী ও পারাবত ট্রেনের আযমপুরের পর ঢাকা অভিমুখী সব স্টেশনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার; সিলেটের সঙ্গে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত এবং যাত্রীদের চাহিদা অনুপাতে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা।
কুলাউড়া স্টেশনের স্টেশনমাস্টার রোমান আহমদ জানান, অবরোধের কারণে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন শায়েস্তাগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল স্টেশনে কিছু সময় আটকা পড়ে। অবরোধ শুরুর আগে সকাল সাড়ে সাতটায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন কুলাউড়া স্টেশন ছেড়ে যায়।
শ্রীমঙ্গলে সিলেটগামী ‘পারাবত এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করা হয়। আজ দুপুর ১২টার দিকে