ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে একটি বিশেষ ট্রেন চালু, কয়েকটি আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি, ট্রেনের আসন বাড়ানোসহ কালোবাজারি বন্ধের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলপথ অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায় সম্মিলিত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে সাধারণ মানুষ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দাবিগুলোর বিষয়ে জেলা নাগরিক ফোরাম সাত বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে। সদ্য গঠিত সম্মিলিত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে আজ সোয়া ১০টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন সাধারণ মানুষ। এ সময় তাঁদের সঙ্গে জেলা সদরের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।

অবরোধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে কোনো ট্রেন না থাকলেও ঢাকাগামী আন্তনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস জেলার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) প্রশাসনের লোকজন। দাবি মানার আশ্বাস পেয়ে জেলার বিক্ষুব্ধ লোকজন অবরোধ তুলে নেন।

অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মোবারক হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম মোমিনুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম, জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য এবং কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম খান প্রমুখ। এ সময় বক্তারা বলেন, রাজস্ব আয়ের দিক থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এখান থেকে ছয়-সাত হাজার যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। কিন্তু এত পরিমাণ যাত্রীর তুলনায় টিকিট সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। এর ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। তাই দ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে নতুন একটি ট্রেন চালু ও আন্তনগর উপবন, বিজয় ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং টিকিট কালোবাজারি বন্ধের দাবি জানান বক্তারা। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে চলাচলকারী তিতাস কমিউটার ট্রেনের বিদ্যমান পুরোনো বগিগুলো সরিয়ে নতুন বগি সংযোজনেরও দাবি জানান তাঁরা।

অবরোধে অংশ নেওয়া জেলার সাধারণ লোকজন জানান, দেশের পূর্বাঞ্চলের রেলপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশন। যেখান থেকে সরকার প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের রাজস্ব পেয়ে থাকে। কিন্তু সেই বিবেচনায় যাত্রীসেবার মান বাড়েনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা রেলপথে চলাচলের জন্য যে পরিমাণ ট্রেন যাত্রাবিরতি করছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। গত সরকারের সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিভিন্ন ট্রেনের অনেক আসন কেটে নেওয়া হয়। এতে জেলাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাঁরা বলেন, জেলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আন্তনগর ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষ কেবল আশ্বাসেই দিন অতিবাহিত করেছে। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের রেলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি হাতে নিতে হয়েছে। তাঁরা আরও জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না এলে আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো.

ইসতিয়াক ভূঁইয়া বলেন, আন্দোলনকারীরা প্রশাসনের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেন। তাঁদের যৌক্তিক দাবিগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এসব দাবির বিষয়ে জেলা প্রশাসক আগেই সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় র লপথ অবর ধ ব র হ মণব ড

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন সময়সূচি আগামী ১০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি এখন সকাল সোয়া ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে এ ট্রেন চলাচল করবে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।

আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি কক্সবাজার স্টেশন ছাড়বে সকাল ১০টায়। এখন এ ট্রেন ছাড়ে ১০টা ২০ মিনিটে। গত মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেসের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান।

রেলওয়ের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদা ও সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনার জন্য কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামমুখী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এখন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করে আরও দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন।

কক্সবাজার রেললাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর। প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে চলাচল শুরু করে পর্যটক এক্সপ্রেস। এটাও দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেন। এরপর ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের কথা বলে গত বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। গত বছরের ১২ জুন থেকে আবার চালু হয় ট্রেন। আর নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।

সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে থামবে।

আর প্রবাল এক্সপ্রেস যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে