বসন্তের ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে রাবি
Published: 4th, March 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ঋতুরাজ বসন্তের আগমন যেন এক নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে। শীতের শুষ্কতা কাটিয়ে প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সাজে। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়াসহ নানা ফুলের রঙে সেজেছে গাছপালা।
পাতাঝরা গাছগুলোতে দেখা দিচ্ছে নতুন কুঁড়ি। দক্ষিণা বাতাসের মৃদু শিহরণ আর পাখির কূজনে সুরেলা হয়ে উঠেছে চারপাশ। নেই কুয়াশার চিহ্ন, বইছে মৃদু বাতাস। ফুল ফুটতে শুরু করেছে, আর ঝরা পাতার দৃশ্য সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আবাসিক হলগুলোর আঙিনাও রঙিন হয়ে উঠেছে ফুলের ছোঁয়ায়। ধীরে ধীরে সবুজের সমারোহে ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ।
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য আর শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস মিলেমিশে রাঙিয়ে তুলেছে পুরো ক্যাম্পাস। বসন্তের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে প্রকৃতি ও হৃদয়ের গভীরে। এদিকে শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরেছে সজীবতা। শিক্ষার্থীরা টুকিটাকি চত্বর, শহীদ মিনার, পরিবহন চত্বর, চারুকলা অনুষদসহ বিভিন্ন জায়গায় বসন্তের আবহ উপভোগ করছেন। প্রকৃতির এ পরিবর্তন প্রাণের উচ্ছ্বাস আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরো পড়ুন:
এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণইফতার আয়োজন করে অভিনব প্রতিবাদ
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুস সানিহা বলেন, “বসন্ত আমার প্রিয় ঋতু। কিছুদিন আগেও সকালে পাখির ডাক শুনতে পেতাম না, এখন শুনতে পাচ্ছি। ক্যাম্পাসের মৃদু বাতাস বেশ উপভোগ করছি। সকালের মিষ্টি রোদ, বিকেলের শান্ত পরিবেশ আর রাতের স্বচ্ছ আকাশ- সবমিলিয়ে দারুণ লাগছে।”
আইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াশিক ইমতিয়াজ বলেন, “কয়েকদিন আগেও প্রচণ্ড শীতে ক্লাসে যেতে ইচ্ছে করত না। কিন্তু এখন ক্যাম্পাসে এলে মনে হয় বসন্ত পুরোপুরি এসে গেছে! এত সুন্দর আবহ যে, ঘরে ফিরতে মন চায় না। দিনভর এ পরিবেশ উপভোগ করতে চাই।”
ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনুভা হোসেন অর্নি বলেন, “ক্যাম্পাসের পরিবেশ এখন দারুণ লাগছে। বসন্তের আমেজ চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। বসন্তের এ সময়টাকে পুরোপুরি উপভোগ করছি।”
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বসন ত র উপভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।