পবিত্র রমজানে কি ব্যায়াম করা যাবে
Published: 6th, March 2025 GMT
অনেকেই বছরজুড়ে ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করে অভ্যস্ত। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগী, হৃদ্রোগী ও স্থূলতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিরা তাঁদের নিয়মিত ব্যায়াম ছাড়তে চান না। তবে পবিত্র রমজানে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সতর্কতা ও কৌশল অনুসরণ করা প্রয়োজন।
রোজায় ব্যায়ামের সঠিক সময় সন্ধ্যার পর। দিনে ব্যায়াম করলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা থাকে। তবে মৃদু ব্যায়াম বা লো ইনটেনসিটির কার্ডিও বা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে সকালের দিকে। এ সময় ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো। কারণ, শরীরে পানির অভাব থাকে। ইফতারের দেড়–দুই ঘণ্টা পর শরীর কিছুটা এনার্জি পায়। তাই এ সময় ভারী ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। স্ট্রেংথ ট্রেনিং, কার্ডিও ও হাই-ইনটেনসিটি ব্যায়াম এ সময় করা ভালো। সাহ্রির আগে (ফজরের আগে বা তাহাজ্জুদের সময়) কিছুটা লো-ইনটেনসিটি ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করা যেতে পারে।
রোজায় ব্যায়ামের ধরন
ওয়াকিং (৩০-৪৫ মিনিট)।
যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং।
সাইক্লিং (লো-ইনটেনসিটি)।
বডি ওয়েট এক্সারসাইজ (পুশ আপ, স্কোয়াট, লাংস, প্ল্যাঙ্ক)।
ভারী ব্যায়াম (শক্তি বৃদ্ধির জন্য): ওজন তোলা (স্ট্রেংথ ট্রেনিং), রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড এক্সারসাইজ।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
পর্যাপ্ত পানি পান করুন ইফতার ও সাহ্রির মাঝে, যাতে ডিহাইড্রেশন না হয়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ভালো ফ্যাট গ্রহণ করুন।
রোজায় অতিরিক্ত ও ভারী ব্যায়াম না করে হালকা এবং মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম করুন।
শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগলে ব্যায়াম কমিয়ে দিন বা এড়িয়ে যান।
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন, যাতে শরীর ক্লান্ত না হয়।
হালকা ও মাঝারি ব্যায়াম রোজায় শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখে। ব্যায়াম ইফতারের পর করা ভালো, যাতে শরীর প্রয়োজনীয় এনার্জি পায় ও পানিশূন্যতা না হয়।
এম ইয়াছিন আলী, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব য য় ম কর
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।