চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমেছে মার্কিন বেসরকারি মহাকাশযান অ্যাথেনা, তবে সম্ভবত উল্টে আছে
Published: 7th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি কোম্পানি ইনটুইটিভ মেশিনস পরিচালিত একটি মহাকাশ যান চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করেছে। কোম্পানিটি এ তথ্য নিশ্চিত করছে। তবে তারা আশঙ্কা করছে, যন্ত্রটি সোজা অবস্থায় নেই।
ইনটুইটিভ মেশিনসের প্রধান নির্বাহী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অ্যাথেনা মহাকাশ যানটির সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ অব্যাহত আছে, তবে এটি যথাযথ অবস্থায় নেই।
কোম্পানি আশা করছে, মহাকাশযানটিতে থাকা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিগুলো এখনো স্থাপন করা সম্ভব। এসব যন্ত্রের মধ্যে আছে—চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর নিকটবর্তী গর্ত খোঁজার উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি হপিং রোবট এবং মোবাইল যোগাযোগ অ্যানটেনা। এ ধরনের অ্যানটেনা এটাই প্রথম পাঠানো হয়েছে।
অ্যাথেনা ইনটুইটিভ মেশিনসের তৈরি দ্বিতীয় কোনো মহাকাশযান যেটি অস্বাভাবিক অবস্থানে থেকে চাঁদে অবতরণ করেছে।
চন্দ্রপৃষ্ঠে পানি ও বরফের অস্তিত্ব অনুসন্ধানের জন্য কোম্পানিটি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। আর নাসা মানুষকে আবারও চাঁদে পাঠানোর লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
গ্রিনিচ মান সময় বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে চাঁদে মনস মাউটন নামক উচ্চভূমির একটি এলাকায় অবতরণ করে অ্যাথেনা। এ এলাকাটির অবস্থান চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরত্বে।
ইনটুইটিভ মেশিনস কর্তৃপক্ষ বলেছে, আগামী দিনগুলোতে লুনার রিকনেসান্স অরবিটার ক্যামেরা অ্যাথেনার একটি ছবি তুলবে। এর মধ্য দিয়ে যানটি ঠিক কোন অবস্থায় আছে, তা নির্ণয় করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অ্যাথেনার নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যেন এটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ এবং পরিমাপসংক্রান্ত কাজগুলো ১০ দিনের মধ্যে শেষ করতে পারে।
এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে মাইক্রো নোভা হপার বা গ্রেস নামের একটি লাফানো রোবটও আছে। রোবটটির নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যেন এটি লাফিয়ে লাফিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠে স্থায়ী ছায়ার মধ্যে থাকা বড় গর্তে পৌঁছে যেতে পারে।
হপার রোবটটি ১০০ মিটার উচ্চতায় উড়তে এবং ১ দশমিক ২ মাইল (২ কিলোমিটার) পর্যন্ত ভ্রমণ করতে সক্ষম। এটি পাঁচবার লাফালে একটি গর্তের ভেতর যেতে পারবে এবং ক্যামেরা দিয়ে ভেতরের ছবি তুলতে পারবে। এ গর্তটিতে কখনোই সূর্যের আলো পৌঁছায় না। এ কারণে সেখানকার তাপমাত্রা অনেক কম এবং এটিকে বরফ খোঁজার জন্য আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
চাঁদে মহাকাশ যান পাঠায় এমন বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছে নাসা। তারা মনে করে, নিজস্ব মিশন পরিচালনার চেয়ে এভাবে কাজ করাটা সাশ্রয়ী।
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইনটুইটিভ মেশিনসের তৈরি ওডিসিয়াস মহাকাশযানটি সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছিল।
সাধারণত অবতরণের সময় মহাকাশযান উল্টে গেলে সব বৈজ্ঞানিক কাজ শেষ করা যায় না। এবারের মহাকাশ যানটির ক্ষেত্রে এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ
সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়।
ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে।
এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”
সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।”
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”
তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস