খুনিরা এখনও মুক্ত কেন, প্রশ্ন অভ্যুত্থানে শহীদ নারীর মায়ের
Published: 7th, March 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ নাঈমা সুলতানার মা আইনুন নাহার বলেছেন, জুলাই আন্দোলনে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে বাসার বারান্দায় আমার মেয়েকে হত্যা করার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সবাই দেখেছেন কে কীভাবে মেরেছে। অথচ খুনিরা এখনও বাহিরে, গ্রেপ্তার হয়নি। এটা মানা যায় না। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। খুনিরা এখনও মুক্ত কেন, এই প্রশ্ন রেখে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন আইনুন নাহার। এদিন জুলাই আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা নিয়ে ‘অভ্যুত্থানে অগ্রগামী নারী’ শীর্ষক আলোচনা এবং জুলাইয়ের ৩৬ ছবি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। এ প্রদর্শনী চলবে শনিবার পর্যন্ত। আয়োজন করছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে উইমেন এন্ট্রপ্রেনিওর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব)।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জুলাই আন্দোলনে আহত ফাহমিদা আলী, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সচিব আকরাম হোসেন সিএফ ও বিএনপি নেতা ও বাউফু সভাপতি তাবিত আউয়াল।
আলোচক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, সাংবাদিক কাজল রশীদ শাহীন, রফিকুল ইসলাম রলি, কবি মঈন মুনতাসির ও ইমরান মাহফুজ। উপস্থিত ছিলেন কবি আবিদ আজম, কবি মামুন সারওয়ার, গবেষক শামস সাঈদ ও জুলাই আন্দোলনে আহত আসিফ মাহামুদ। সভাপতি হিসেবে ছিলেন ওয়েবের সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল।
তাবিথ আউয়াল বলেন, জুলাই আন্দোলনে নারীরা দেখিয়েছেন তাদের শক্তি ও সামর্থ। এখন তাদের প্রেরণায় সমাজ নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তাদের যে ত্যাগ ও স্বপ্নের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এখন আমাদের সবার স্বপ্ন।
মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, নারীদের প্রতি যথাযথভাবে আমাদের সম্মান দেখাতে হবে। তাদের অবদানের কথা ভুলে গেলে চলবে না। এমন উদ্যাগের জন্য ধন্যবাদ আয়োজকদের।
আকরাম হোসেন সিএফ বলেন, জুলাই আন্দোলনে মাদ্রাসা স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ভেদাভেদ ছিল না। বোরকা হিজাব এসবের কোনো বালাই ছিল না। সবার স্বপ্ন ছিল বৈষম্যহীন সমাজ। তারা না থাকলে আমাদের আন্দোলন সফল হতো না। তাই তাদের ত্যাগ ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবাইকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে।
নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, অভ্যুত্থানে অগ্রগামী নারীদের প্রেরণায় আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এবং এই মেলা নারীদের আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন এবং উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি শুধু নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্যই নয় বরং সমাজে নারীদের অবদানকে আরও গতিশীল করবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন আম দ র আউয় ল
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ