নরসিংদীতে তুচ্ছ ঘটনায় ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা, বাবাকেও গুরুতর আহত
Published: 11th, March 2025 GMT
নরসিংদীর পলাশে অটোরিকশায় যাত্রীদের যাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে সুমন মিয়া (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তার বাবা আলম মিয়া।
সোমবার (১০ মার্চ) রাতে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমন উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতো।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, বিকেলে জয়নগর বাজারে নিহতের চাচা মুকুল মিয়ার সাথে প্রতিবেশি ৪ থেকে ৫ জনের একটি অটোরিকশা ভাড়া করা নিয়ে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যায় তারা সংঘবদ্ধ হয়ে মুকুলের বাড়িতে হামলা করতে যায়। বাড়ির পাশে হৈচৈ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে সুমন ও তার বাবা আলম মিয়া দেখতে যান। এসময় তাদের সামনে পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়া হামলায় আহত আলম মিয়ার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের চাচা মুকুল মিয়া বলেন, “আমার মা অটোরিকশায় করে ভাতিজার জন্য ঔষধ আনতে গিয়েছিলো। এসময় আয়ুব মিয়া ও তারেক এই রিকশায় যেতে চেয়েছিলো। রিকশাচালক কেনো মাকে নিলো এজন্য তারা খারাপ ব্যবহার করে। আমি তার প্রতিবাদ করি। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার বাড়িতে হামলা করতে এসে সুমনকে কুপিয়ে হত্যা ও তার বাবাকে গুরুতর আহত করে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।”
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা শওকত হাসান বলেন, “রাতে দুইজন ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরমধ্যে সুমন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে মারা যায়। আর আলম মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সুমনের হাত, বুক ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।”
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আটকে অভিযান চলছে।
ঢাকা/হৃদয়/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে ঢাকায় শ্রমিকদের ‘ভুখা মিছিল’
গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া উইনটেক্স গ্লোভস কারখানা পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনের ১৭তম দিনে রাজধানীতে ভুখা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিজয়নগরের শ্রম ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৫ জুন বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়। পরদিন ১৬ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং পরে শ্রম উপদেষ্টা ও শ্রমসচিবকে দুইবার লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়। আজ (বুধবার) ১৭তম দিন যাবৎ শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান আন্দোলনের পর অদ্যাবধি তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি, এমনকি শ্রমিকদের সাথে কথাও বলেননি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কাজী মো. রুহুল আমিন আরও বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে শ্রমিকদের সুসম্পর্কের পরিবর্তে মুখোমুখি দাঁড়ানো কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকার যদি মালিক পুষে শ্রমিক মারার পথ অনুসরণ করে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উইনটেক্স গ্লোভস শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মো. তুহিন এবং সঞ্চালনা করেন শ্রমিকনেতা জালাল হাওলাদার। আরও বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সেকেন্দার হায়াত, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।