এই শহরের শিশুরাও পার্কে যেতে চায়
Published: 13th, March 2025 GMT
রাজধানীর রমনা পার্ক। পার্কের শিশুচত্বরের স্লিপার বেয়ে নামতে চেষ্টা করছিল ছোট্ট এক মেয়েশিশু। পরনে আকাশি রঙের জামা। ভারসাম্য ঠিক রাখতে স্লিপারের দুপাশ থেকে সন্তানের দুই হাত ধরে রেখেছিলেন মা ও বাবা। শিশুটির নাম আরশী খন্দকার।
বৃহস্পতিবার আরশীর জন্মদিন। তিন বছর পূর্ণ হয়েছে তার। জন্মদিনে ঘুম ভাঙতেই আড়মোড়া ভেঙে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বলেছে, ‘আজ তো একটু রমনা পার্কেও যেতে পারতাম।’ জন্মদিনে একমাত্র সন্তানের আবদার মেটাতে তাই পার্কের শিশুচত্বরে ছুটে এসেছেন মা–বাবা।
মা সামিয়া ইয়াসমিন আরশীকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বললেন, তাঁর এই ছোট্ট মেয়েকে সপ্তাহে অন্তত একদিন রমনা পার্ক বা অন্য কোনো খোলা জায়গায় নিয়ে যেতে হয়। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা খন্দকার রবিউল ইসলাম। তিনি এগিয়ে এসে জানালেন, তাঁর সন্তানটি গাছ ভালোবাসে। বাসার ছাদের গাছে পানি দেয় সে।
জন্মদিনে সন্তান আরশীকে নিয়ে মা–বাবা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?