পাবনার ঈশ্বরদীতে তালবাড়িয়া ডিগ্রির চরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়লিয়া গ্রামের নছিরের ঘাট ও আকাতের ঘাটের দেড় কিলোমিটারের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। 

চরকুড়লিয়া এলাকার সাইদুর রহমান ও কুষ্টিয়ার হরিপুর ইউনিয়নের মুকুলের পক্ষ আধিপত্যের দ্বন্দ্বে গোলাগুলি ও মহড়া দিয়েছে বলে জানা গেছে।

গভীর রাতে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে গ্রামের বাসিন্দারা জেগে ওঠেন। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এ নিয়ে আজ রোববার সকালেও দুপক্ষের শক্তি প্রদর্শনের মহড়া চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। প্রতিপক্ষের হামলায় চরকুড়লিয়া গ্রামের সাহাবুল ইসলামসহ দুজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সাইদুর ও মুকুল পক্ষের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীও জড়িত রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী খোলস পাল্টে বিএনপির সঙ্গে মিশে চর এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় শক্তি প্রদর্শন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে লক্ষ্মীকুন্ডার তালবাড়িয়া সরকারি খাস জমি প্রকাশ্যে ইজারা দেওয়া হয়। এরপর থেকে খাসজমি বণ্টন ও আধিপত্য নিয়ে সাইদুর ও মুকুল পক্ষের মধ্যে দৃশ্যমান দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। ঈশ্বরদী শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নছিরের ঘাট ও আকাতের ঘাট এলাকায় দুপক্ষ মহড়া দিতে শুরু করে। শনিবার রাত আড়াইটা পর্যন্ত দুপক্ষ গুলিবর্ষণসহ ককটেলের বিকট শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘শব্দ এত প্রকট ছিল যে, আমরা ভয়ে ঘরের লুকিয়ে ছিলাম। মনে হয়েছে, এগুলো গুলি ও ককটেলের শব্দ। লক্ষ্মীকুন্ডায় গোলাগুলি, মারামারি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং দখলের মূল কারণ ডিগ্রির চর তালবাড়িয়ার খাস ভূমি।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চরের সরকারি খাসজমি নিয়ন্ত্রণ করতেন দলের প্রভাবশালীরা। এরই মধ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে এক বছরের জন্য প্রকাশ্যে নিলামে ইজারা দেওয়া হয়। এরপর থেকে একাধিক পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। 

লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের বিট পুলিশিং ইনচার্জ (এসআই) জামাল মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এলাকার প্রভাবশালী সাইদুর ও মুকুল পক্ষের মধ্যে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ও আধিপত্য নিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুকুলকে পাওয়া যায়নি। তাঁর প্রতিপক্ষ সাইদুর রহমানের ভাষ্য, রাতের ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রতিপক্ষ তাঁর লোকজনকে চরে যেতে দিচ্ছে না।

এলাকার আধিপত্য নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে জানিয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। 

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদত হোসেন খান বলেন, তালবাড়িয়া ডিগ্রির চরের জমি ইজারা দেওয়া হয়েছে। কী কারণে সেখানে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তা তাঁর জানা নেই। তারপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন এল ক য় এল ক র র ঘটন সরক র ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যুবক গ্রেপ্তার, চুরির ২০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানা পুলিশ প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণসহ মেহেদী হাসান (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ রবিবার (১৫ জুন) সকালে পৌর এলাকার সড়ক বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণগুলো একদিন আগে পৌর এলাকার দুর্গাপুরের একটি বাড়ি থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণের সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন জানান, মেহেদী হাসান নামে ওই যুবক স্বর্ণ বিক্রির জন্য ঘোরাঘুরির খবরে তাকে আটক করা হয়। এরপর তার কাছ থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়, যা চুরি হওয়ার ভুক্তভোগী পরিবার তাদের বলে চিহ্নিত করেছেন। ওই বাড়ি থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ চুরি হয় বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, তদন্ত করে ওই যুবকই চুরি করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিকেল নাগাদ জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজে চুরির কথা স্বীকার করছেন না। পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হবে। মেহেদী হাসানের বাড়ি কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে।

আরো পড়ুন:

কারাগারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

আদালত চত্বর থেকে হ্যান্ডকাফসহ পালানো দুই আসামি গ্রেপ্তার

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্গাপুরের টিপু মিয়ার বাড়ির দোতলা থেকে গত শুক্রবার (১৩ জুন) রাত থেকে শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টার মধ্যে কোনো এক সময় চুরি হয়। চোর বা চোরের দল বাড়ির দোতলার বাথরুমে এগজস্ট ফ্যান ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলমারি থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় টিপু মিয়ার স্ত্রী শান্ত আক্তার থানায় লিখিত অভিযোগ করে। রবিবার সকালে পুলিশ খবর পায় যে এক যুবক স্বর্ণ বিক্রির জন্য কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘুরছেন। চুরির ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক তিন কিলোমিটার দূরে সড়ক বাজার এলাকায় তিনি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। এ সময় তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে তল্লাশি চালালে প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বাকি স্বর্ণ উদ্ধারে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা/পলাশ/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ