দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু চালু, ৩ মিনিটে যমুনা পার
Published: 18th, March 2025 GMT
অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু চালু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পূর্ব প্রান্ত থেকে অতিথি নিয়ে উদ্বোধনী ট্রেনটি তিন মিনিটে সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছায়। সেতুটি চালুর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।
প্রধান অতিথি হিসেবে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম। পরে উদ্বোধনী ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার গতিতে মাত্র ৩ মিনিটে সেতু পার হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি ও জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইতো তেরুয়ুকি উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো.
মাসউদুর রহমান বলেন, আগে যমুনা সেতু দিয়ে যেখানে ২০-২৫ মিনিট লেগেছে, সেখানে নতুন সেতু দিয়ে মাত্র আড়াই থেকে ৩ মিনিট সময় লাগবে নদী পার হতে। সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার বেগে দুটি ট্রেন পাশাপাশি চলবে। দুই প্রান্তের সিঙ্গেল ট্র্যাকের কারণে যমুনা রেলসেতুর পুরোপুরি সুবিধা পেতে দেরি হলেও সেতুটি নির্মাণের ফলে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হলো।
৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামো দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে যমুনা রেলসেতু। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৫ সাল পর্যন্ত।
যমুনা রেলসেতু দিয়ে এখন থেকে প্রতিদিন ৮৮টি ট্রেন নিয়মিত চলবে এবং সেতু ব্যবহারকারীদের আসন শ্রেণির ওপর ৪৫ থেকে ১৪৫ অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে। রেলসেতু উদ্বোধন শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে সংবাদ সম্মেলনে সচিব ফাহিমুল ইসলাম ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই সেতুতে চলাচল করা ট্রেনের ভাড়া বাড়বে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র লস ত
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫