বিচারিক প্রক্রিয়ায় গণহত্যাকারী আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: হেফাজতে ইসলাম
Published: 23rd, March 2025 GMT
বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষের সমর্থন ও সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত নির্দিষ্ট কৌশল ও পরিকল্পনা প্রকাশ করা। আওয়ামী পরিচয়ে কোনো সামাজিক ও রাজনৈতিক তৎপরতা চলতে দেয়া যাবে না। এছাড়া, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছদ্মবেশী ভারতীয় দালালদের কারণে ৫ মে শাপলার গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন ও চব্বিশের গণহত্যার বিচারিক প্রক্রিয়া গতিহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিটি গণহত্যার ঘটনায় আরো গভীর অনুসন্ধান ও তদন্তের মধ্য দিয়ে পূর্ণ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে করুন। যে বা যারাই এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তারা দেশের জনগণ ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মতভেদ তীব্র আকার ধারণ করেছে। আমরা মনে করি, কোনো একক গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছার ওপর এটি নির্ভর করার সুযোগ নেই। বরং পর্যাপ্ত রাষ্ট্র-সংস্কার, গণহত্যার বিচার, জাতীয় ঐকমত্য ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত চাহিদার ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচন হতে হবে। আমাদের রাষ্ট্রকে পুরনো ফ্যাসিস্ট কাঠামো ও দাসত্বের শৃঙ্খলে আমরা ফিরে যেতে দিব না ইনশাআল্লাহ।’
তারা বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান জনগণের ঈমান আকীদা, ধর্ম, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সভ্যতা অটুট রেখে রাষ্ট্র কাটামো সংস্কার করতে হবে। পাশ্চাত্য ও হিন্দুত্ববাদী চেতনা নির্ভর ভোগবাদী দর্শনে কোন কল্যাণ বয়ে আনবেনা। সব রাজনৈতিক দলকে মনে রাখতে হবে, আলেম ওলামা ও তৌহিদি জনতার সমর্থন ছাড়া কারো পক্ষে বৈধ পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা টিকে থাকা সম্ভব হবে না।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ৬ মাসের পর্যবেক্ষণে আমাদের মনে হয়েছে, এ মুহূর্তে রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কারও আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ উপদেষ্টার অদক্ষতা ও ব্যর্থতা ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। অনেকের মধ্যে জুলাই বিপ্লবের চেতনাও অনুপস্থিত। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপে কাজ না করে কেউ কেউ হঠাৎ পেয়ে যাওয়া চেয়ার নিছক উপভোগ করছেন। এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না। জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা ভর করেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
কয়েকটি রাজনৈতিক দলের জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিকে অনভিপ্রেত, অগণতান্ত্রিক এবং দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য বিপজ্জনক আখ্যায়িত করেছেন দলটির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, যে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে জাতীয় পার্টি অতীতে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল, সেই জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে? বিষয়টি বিস্ময়কর ও দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে জাতীয় পার্টির এই অংশের মহাসচিবের বাসভবনে জরুরি মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আরও বলেন, জাতীয় পার্টি তার জন্মলগ্ন থেকেই জনগণের অধিকার, গণতান্ত্রিক চর্চা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারক ও বাহক। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জাতীয় পার্টি কখনোই কোনো রাজনৈতিক অপরাধে জড়িত হয়নি বা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়নি, যার কারণে দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়; বরং দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বাধীনতার পর দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, গ্রাম থেকে শহরে উন্নয়ন ছড়িয়ে দেওয়া, আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার ইতিহাস জাতীয় পার্টির রয়েছে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি যোগ করেন, কাউকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এবং জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেয়।
সভায় জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান, সরদার শাহজাহান, ফখরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন প্রমুখ।