সেনাবাহিনী পক্ষে ছিল বলেই হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে: রিজভী
Published: 23rd, March 2025 GMT
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১৯৭১, ৯০ এবং ২০২৪ সালের আন্দোলনে সেনাবাহিনী দেশের জনগণের পক্ষে থাকার কারণেই আমাদের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে এবং শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তাই এই প্রতিষ্ঠানকে মর্যাদা দিতে হবে, আমাদেরকে সম্মান দেখাতে হবে।
আজ রোববার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এ্যাব) উদ্যোগে পথচারী ও প্রান্তিক মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে। দেশ ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। তাই আমাদের সবাইকে সহনশীল হতে হবে। গণতন্ত্রকে মজবুত শক্তিশালী করার জন্য, আরও সামনে যে কাজ আছে অর্থাৎ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন, একটি ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ, আইনের শাসন এবং প্রতিটি মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার যে গণতান্ত্রিক সমাজ সেই সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের এখন লড়াই করতে হবে। আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
রিজভী বলেন, আমাদেরকে আরও সতর্ক থাকতে হবে যেসব প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে আমাদের দ্বারা সেইসব প্রতিষ্ঠানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালে আমাদের সেনাবাহিনী দেশের জনগণের সঙ্গে ছিল। এবং সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা মেজর তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সব সময় দেশের জনগণের পক্ষে কাজ করেছে। আমরা ৯০ এর আন্দোলনেও দেখেছি, আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ২০২৪ সালেও আমরা দেখেছি এই সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
এ্যাবের সদ্য সাবেক মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় আমরা পথচারী ও প্রান্তিক মানুষের মাঝে দুই দিন ইফতার বিতরণ কর্মসূচি পালন করব।
ইফতার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- এ্যাবের সদ্য সাবেক মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন, প্রকৌশলী এটিএম তানভির-উল হাসান তমাল, প্রকৌশলী মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, প্রকৌশলী বিজু বড়ুয়া, প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, প্রকৌশলী মুহাম্মাদ আহসানুল রাসেল, প্রকৌশলী নাজমুল হুদা খন্দকার, প্রকৌশলী আবু হোসেন হিটলু, প্রকৌশলী কামরুল হাসান খান সাইফুল, প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ ওসমানী, প্রকৌশলী নূর আমিন লালন, প্রকৌশলী শামীম রাব্বি সঞ্চয়, প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন, প্রকৌশলী গোলাম রহমান রাজিব, প্রকৌশলী মিনহাজ, প্রকৌশলী সিয়াম, প্রকৌশলী সিরাজ, প্রকৌশলী সোহাগ, প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান, প্রকৌশলী সারোয়ার মওলা, প্রকৌশলী খান ফয়সাল, প্রকৌশলী হুমায়ুন, প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর, প্রকৌশলী পারভেজ, প্রকৌশলী তৌহিদ, প্রকৌশলী সালমান, প্রকৌশলী আরিফ, প্রকৌশলী মাহাদী, প্রকৌশলী আশিক, প্রকৌশলী শাহীন হাওলাদার, প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন সুজন, প্রকৌশলী শরিফুল বাবু, প্রকৌশল রেজাউল করিম, প্রকৌশলী মাইনুল, প্রকৌশলী সেজান, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, সহ এ্যাবের বহু সংখ্যক প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ইফত র ব তরণ আম দ র স জনগণ র
এছাড়াও পড়ুন:
তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের দিনমজুর পারভিন আক্তার (৪৭)। তিনি এই বাজারে আলুর একটি আড়তে কাজ করেন। বসে বসে আলু বাছাই করা তাঁর কাজ। প্রতিদিন পান ৬০০ টাকা। সংসারে অসুস্থ স্বামী। তবে তিনি মাঝেমধ্যে রিকশা চালান। স্বামীর আয় নিয়মিত নয়। তাঁদের মেয়ে ও এক ছেলে সঙ্গে থাকে। মেয়েটির আবার দুটি সন্তান আছে। পুরো পরিবারটি পারভিনের আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
গত এপ্রিল থেকে চলতি সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত নিজে অন্তত দুই বার এবং মেয়ে ও তাঁর ছেলেটি তিন বার করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পারভিন কাজে গেলে টাকা পান, না গেলে নেই। এভাবে অসুখের কারণে এ বছর ১১ দিন কাজে যেতে পারেননি, স্মরণ করে বলেন পারভিন। কারওয়ানবাজারে কাজের যে পরিবেশ, সেখানে গরমে ঘামতে হয়। কয়েক বছর ধরে গরমটা অসহনীয় বলে মনে হয় তাঁর কাছে।
পারভিন বলছিলেন, ‘ঘাম শরীরে বইসা অসুখ বাধায়। গরম এত বাড়ছে যে কওনের কথা নাই।’
পারভিনের মতো এমন অসংখ্য মানুষের এভাবেই গরমের কারণে কর্মদিবস নষ্ট হচ্ছে। এই তো গত বছরেই (২০২৪) ২১ হাজার কোটি টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটির নাম ‘অ্যান আনসাস্টেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ।’ এতে ১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সঙ্গে আছে ২০২৪ সালে করা একটি বড় জরিপ, যেখানে দুই ধাপে ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে প্রশ্ন করা হয়।
১৯৮০ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১°ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এ সময় গরমের অনুভূতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৫°ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এ সময়ে ঢাকার গরম বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার গরম জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি। এর ফলে ডায়রিয়া, দীর্ঘ কাশি, শ্বাসকষ্ট আর প্রচণ্ড অবসাদ—এসব রোগ বেড়েছে।
অধ্যাপক আবদুস সালাম তাঁর একাধিক গবেষণায় দেখিয়েছেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে দূষণের সম্পর্ক আছে। তিনি বলছিলেন, বিশেষ করে ঢাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী কয়েকটি ক্ষতিকর গ্যাস। এর মধ্যে আছে ব্ল্যাক কার্বন, কার্বন ডাই–অক্সাইড ও মিথেন।গরমের প্রভাবের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে। ২০২৪ সালে গরমের কারণে বাংলাদেশে প্রায় ২৫ মিলিয়ন কর্মদিবস (আড়াই কোটি দিন) নষ্ট হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার এবং প্রতিবেদনের সহলেখক ইফফাত মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অতিরিক্ত গরমে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে এবং এর সঙ্গে সরাসরি উৎপাদনশীলতার ক্ষতিও ঘটছে। অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা হারানোর বাস্তব ঝুঁকির মুখে।’
আরও পড়ুনতাপমাত্রা এত বাড়ছে কেন?২১ এপ্রিল ২০২৪প্রখর রোদে ছাতা মাথায় মাঠের মধ্যে ধান শুকাচ্ছেন এক গৃহবধূ। কাইমউদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, নর্থ চ্যানেল, ফরিদপুর