আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের কারসাজি: রাভী হাফিজকে ১৫ কোটি টাকা দণ্ড
Published: 23rd, March 2025 GMT
পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বিনিয়োগকারী গাজী রাভী হাফিজকে ১৫ কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মে পর্যন্ত সময়ে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার যোগসাজশের মাধ্যমে কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয়। কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতে গাজী রাভী হাফিজ ৪টি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় এনেছে বিএসইসি।
বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা শেয়ার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন যে কোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করায় গাজী রাভী হাফিজকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৩) লঙ্ঘনের দায়ে ৭.
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য রাইজিংবিডি ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
কারসাজিতে জড়িত ব্যক্তির পরিচিতি
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজি করে গাজী রাভী হাফিজ বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে। এ কাজের মূলহোতা তিনি নিজেই ছিলেন। তিনি একজন শেয়ার ব্যবসায়ী। তবে গাজী রাভী হাফিজ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তিনি প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে পোর্টফোলিও ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ না করলেও শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন।
বিএসইসির তদন্ত কার্যক্রম
গাজী রাভী হাফিজ তার ৪টি বিও হিসাব থেকে যোগসাজশ করে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সিরিজ ট্রানজেকশন (লেনদেন) করে। কারসাজির সঙ্গে জড়িতরা ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মে পর্যন্ত সময়ে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম বাড়ায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৭৪.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৬.১০ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৬১.৬০ বা ৮২.৬৮ শতাংশ বাড়ে যায়।
কারসাজির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির সিদ্ধান্ত
অভিযুক্ত গাজী রাভী হাফিজ ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মে পর্যন্ত সময়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৩) ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘনের মাধ্যমে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন করে একটি কৃত্রিম বাজার সৃষ্টি ও পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন।
এ ছাড়া তিনি ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ ও ১৪ মার্চ উপর্যুক্ত ৪টি বিও হিসাবে অস্বাভাবিক সংখ্যক তথা ১৬৫টি হাওলার মাধ্যমে ৭২ হাজার ১৯৭টি শেয়ার লেনদেন করেন, তাছাড়া অন্যান্য বিও হিসাবে স্বল্প সময়ে সিরিজ ট্রানজেকশন (সিরিজ লেনদেন) করে শেয়ারটির বাজারমূল্য অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়ের জন্য প্রভাবিত করেছেন। এর মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৫) এর লঙ্ঘন হয়েছে, যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ এর আওতায় দণ্ডনীয় অপরাধ।
তাই ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মে পর্যন্ত সময়ে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি করায় গাজী রাভী হাফিজকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৩) লঙ্ঘনের দায়ে ৭.৫০ কোটি টাকা এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৫) লঙ্ঘনের দায়ে ৭.৫০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে হিসেবে গাজী রাভী হাফিজকে মোট ১৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজী রাভী হাফিজ রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত আমি এ বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে কোনো চিঠি হাতে পাইনি। তাই কিছুই বলতে পারছি না।’’
শেয়ার কারসাজির বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য আপনাকে বিএসইসি শুনানিতে ডাকা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘শুনানি তো বিভিন্ন কারণে হয়েই থাকে। তবে আমি এ বিষয়ে জেনে বিস্তারিত জানাতে পারব।’’
ঢাকা/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০২৪ স ল র ২ ফ ব র য় র র শ য় র ক রস জ শ য় র ল নদ ন ব এসইস র ৭ ৫০ ক ট ক রস জ র ১৫ ক ট
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
জেডি ভ্যান্স বলেন, তাঁর যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাঁকে তাঁর আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’
এ বছর জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে জেডি ভ্যান্স ও তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স