স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন ধোয়ার যন্ত্রের কেনাকাটার অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন
Published: 24th, March 2025 GMT
স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন ধোয়ার যন্ত্রের কেনাকাটার অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. জিয়াউল হক।
আজ সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্য করা হয়েছে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) আহমেদ মাহবুব চৌধুরীকে। কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন ধোয়ার জন্য ৩৮ কোটি টাকায় দুটি স্বয়ংক্রিয় ধৌতকরণব্যবস্থা বা ওয়াশিং প্ল্যান্ট কিনেছিল। একটি স্থাপন করা হয় ঢাকার কমলাপুরে, অন্যটি রাজশাহীতে। ২০ মাসের মাথায় প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ হয়ে যায়।
এ নিয়ে ১৬ মার্চ ‘দুই বছরের মাথায় যন্ত্র বিকল: একেকটি ট্রেন ধুতে গচ্চা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা’ শিরোনামে প্রথম আলোতে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, দুটি প্ল্যান্ট দিয়ে ২ হাজার ৯২৯ বার ট্রেন ধোয়া সম্ভব হয়েছিল। হিসাব করে দেখা যায়, প্ল্যান্ট দুটি স্থাপনে যে ব্যয় হয়েছে, তাতে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্ল্যান্ট দুটি চালানো হতো বিদ্যুতের সাহায্যে। ট্রেন ধোয়ার কাজে পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হতো। এর পরিচালনায় থাকা লোকবলসহ সব খরচ ধরলে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। রেলওয়ে সব সময় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে ট্রেন ধোয়ার কাজ করে থাকে। প্রচলিত ব্যবস্থায় হাতে ট্রেন ধুতে খরচ হয় এক হাজার টাকার মতো।
ওয়াশিং প্ল্যান্ট নামে যে ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তাতে মূলত কিছু স্বয়ংক্রিয় ব্রাশ, সাবানপানি ও সাধারণ পানি ছিটানোর ব্যবস্থা এবং কয়েকটি বৈদ্যুতিক পাখা ছিল। সাধারণ এ ব্যবস্থা তৈরিতে এত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক দিন ধরে প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ। সেগুলো আবার চালু করতে আরও বিনিয়োগ দরকার, যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ সদস য র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।