মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে গাড়িতেই মারা গেলেন ক্যানসারে আক্রান্ত ছেলে
Published: 24th, March 2025 GMT
বয়োবৃদ্ধ মাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেখে নিজের চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত সাদেকুল ইসলাম। পথিমধ্যে জানতে পারেন, মা মারা গেছেন। এরপর নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ঘটনা। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে মা কদবানু (৮৫) ও বেলা দুইটার দিকে ছেলে সাদেকুল (৬৮) মারা যান। মা-ছেলের মর্মান্তিক এ মৃত্যুতে বাড়িতে চলছে মাতম, গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
কদবানু বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ছেলে সাদেকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। সাদেকুল দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন। ১৫ দিন পরপর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতেন সাদেকুল। ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকায় থাকলেও সাদেকুল আত্মগোপনে ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মোসাম্মত কদবানু বার্ধক্যের কারণে আজ সকাল ১০টার দিকে মারা যান। এর আগে সকাল নয়টার দিকে লিভার ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন সাদেকুল। ঢাকার ৩০০ ফুট সড়ক এলাকায় পৌঁছালে সাদেকুলের সঙ্গে থাকা স্বজনেরা কদবানুর মৃত্যুর সংবাদ পান। মৃত্যুর সংবাদ শুনে গাড়িতে থাকা স্বজনেরা কান্নাকাটি শুরু করেন। স্বজনদের কান্না দেখে মায়ের মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে সাদেকুল গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেলা দুইটার দিকে স্বজনেরা সাদেকুলকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যার দিকে স্বজনেরা সাদেকুলের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুরে জোহর নামাজের পর চম্পকনগর কলেজ মাঠে মা-ছেলের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
সাদেকুল দুই ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে প্রকৌশলী শরীফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ১৫ দিন পরপর ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যান। আজ সকালে চিকিৎসার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। ৩০০ ফুট পৌঁছার পর সঙ্গে থাকা ফুফাতো ভাই সংবাদ শুনে কান্নাকাটি করেন। তা দেখে দাদি মারা গেছেন বুঝতে পেরে বাবাও সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বজন র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা চালুর দাবিতে ঢাকায় শ্রমিকদের ‘ভুখা মিছিল’
গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া উইনটেক্স গ্লোভস কারখানা পুনরায় চালু ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনের ১৭তম দিনে রাজধানীতে ভুখা মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিজয়নগরের শ্রম ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর হয়ে পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৫ জুন বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করা হয়। পরদিন ১৬ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং পরে শ্রম উপদেষ্টা ও শ্রমসচিবকে দুইবার লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চাওয়া হয়। আজ (বুধবার) ১৭তম দিন যাবৎ শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান আন্দোলনের পর অদ্যাবধি তাঁরা কোনো উদ্যোগ নেননি, এমনকি শ্রমিকদের সাথে কথাও বলেননি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কাজী মো. রুহুল আমিন আরও বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে শ্রমিকদের সুসম্পর্কের পরিবর্তে মুখোমুখি দাঁড়ানো কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, অতীতের সরকারগুলোর মতো বর্তমান সরকার যদি মালিক পুষে শ্রমিক মারার পথ অনুসরণ করে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উইনটেক্স গ্লোভস শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক মো. তুহিন এবং সঞ্চালনা করেন শ্রমিকনেতা জালাল হাওলাদার। আরও বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সেকেন্দার হায়াত, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।