রুয়েটে পিএইচডি-পিজিডি কোর্স, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও সুযোগ
Published: 25th, March 2025 GMT
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) ও ইনস্টিটিউট অব এনার্জি অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্ট স্টাডিজে (আইইইএস) পিএইচডি/এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং/এম ইঞ্জিনিয়ারিং/পিজিডি কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য কয়েকটি শর্তে আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত ফরমে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। আবেদনপত্রের সঙ্গে ১০০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুনআইডিবি দেবে ৭২০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ, মিলবে হাতখরচের অর্থ২৩ মার্চ ২০২৫আবেদনের শর্ত হলো১.
অথবা, সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনে পিজিডি (পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা) ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি, ইঞ্জিনিয়ারিং/ বিএসসি, এজি/বিএসসি, অর্থনীতি অথবা বিএসসি/ বিএসসি ডিগ্রি/ এমএ অথবা এমএসসি অথবা এমএসএস ডিগ্রি/আর্কিটেক্টে ব্যাচেলর ডিগ্রি বা সমতুল্য ডিগ্রিতে সিজিপিএ–৪.০০ এর মধ্যে ২.৭৫ পেতে হবে।
আরও পড়ুনপেছাল গণিত পরীক্ষা, এসএসসি-২০২৫-এর নতুন রুটিন প্রকাশ১৯ মার্চ ২০২৫২. আইআইসিটি ও আইইইএসে পিজিডি (IICT ও IEES-এ PGD (Post Graduate Diploma) কোর্সে ভর্তির জন্য প্রার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল্য পর্যায়ে যেকোনো একটিতে জিপিএ–৫.০০-এর মধ্যে কমপক্ষে ৩.৫০ পেয়ে পাস করতে হবে, তবে কোনো পরীক্ষাতে জিপিএ–৫.০০–এর মধ্যে ৩.০০–এর নিচে/তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য নয় এবং কোনো স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং/বিএসসি এজি/বিএসসি ইকোনমি অথবা বিএসসি/ বিএসসি ডিগ্রি/ এমএ অথবা এমএসসি অথবা এমএসএস ডিগ্রি/ ব্যাচেলর আর্কিটেক্ট ডিগ্রি বা সমতুল্য ডিগ্রিতে ৪.০০–এর মধ্যে ২.৫০ পেতে হবে।
৩. দরখাস্তের সঙ্গে এসএসএল (SSL) সার্ভিসের মাধ্যমে ১০০০/ (এক হাজার) টাকা পরিশোধ করতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি ফরম পূরণ করে ২০/০৩/২০২৫ থেকে ১২/০৪/২০২৫ মধ্যে আবেদন করতে হবে। সব পরীক্ষার সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট/মার্কসিটের সত্যায়িত ফটোকপি এবং সিলেবাস/কারিকুলামের সত্যায়িত ফটোকপি ওয়েবসাইট লিংকে জমা দিতে হবে। তবে পাবলিক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাস করা শিক্ষার্থীদের সিলেবাস/কারিকুলামের ফটোকপি জমা দিতে হবে না।
৫. সব নির্বাচিত প্রার্থীকে (স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উপযুক্ত বলে গণ্য হলে) পিজিডির নির্ধারিত ভর্তি ফি ১২,০০০/- (বারো হাজার) টাকা এবং পিএইচডি/এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং/এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নির্ধারিত ফি ১৮,৫০০/- (আঠারো হাজার পাঁচ শ) টাকা প্রদান করে ৩০/০৪/২০২৫ মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে এবং শিক্ষা শাখায় কাগজপত্রাদি জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ, জেনে নিন বিস্তারিত১১ মার্চ ২০২৫৬. চাকরিরত প্রার্থীকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
৭. প্রার্থী ইতিপূর্বে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে থাকলে ভর্তির সময় ভর্তি বাতিলের সনদ জমা দিতে হবে।
৮. চাকরিরত প্রার্থী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সম্মতিক্রমে খণ্ডকালীন ছাত্র হিসেবেও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৯. চাকরিরত পিএইচডি প্রার্থীকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে এক বছরের ছুটি নিতে হবে।
১০. বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ভর্তি–ইচ্ছুক প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নিম্নের বিষয়গুলো প্রযোজ্য হবে। (ক) বিশ্ববিদ্যালয়টি ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। (খ) রুয়েটের সঙ্গে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ও ক্রেডিট সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, আবেদন স্নাতক-স্নাতকোত্তরেইউনিভার্সিটি অব লুক্সেমবার্গের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তরে প্রয়োজন নেই আইইএলটিএসআইডিবি দেবে ৭২০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ, মিলবে হাতখরচের অর্থগুরুত্বপূর্ণ তারিখআবেদন শুরু: ২০ মার্চ থেকে
আবেদন শেষ: আগামী ১২ এপ্রিল
যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল
ভর্তি পরীক্ষা: ১৯ এপ্রিল
ফলাফল প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল
ক্লাস শুরু: আগামী ৩ মে
আবেদনের জন্য ওয়েবসাইটের লিংক: www.pg.ruet.ac.bd
আরও পড়ুনআরব আমিরাতে বৃত্তি, ইংরেজি দক্ষতায় বিনা মূল্যে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির সুযোগ ১০ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমত ল য ড গ র ম র চ ২০২৫ প এইচড পর ক ষ প স কর ব এসস
এছাড়াও পড়ুন:
মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।
‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা
শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।
শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫ঐতিহাসিক পটভূমি
মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা
মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।
আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’
সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট
আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪