পিরোজপুরে ৩ উপজেলার সহস্রাধিক পরিবারের ঈদ পালন
Published: 30th, March 2025 GMT
ঈদের আগের দিন সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ পালন করছেন পিরোজপুরের তিন উপজেলার ১১ গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার।
রবিবার (৩০ মার্চ) সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে তারা ঈদ পালন করছেন।
জানা গেছে, জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ৬টি গ্রাম, কাউখালী উপজেলার ২টি গ্রাম, নাজিরপুরের ১টি গ্রাম, পিরোজপুর সদরের ২টি গ্রামে এ ঈদ উৎসব পালন হচ্ছে।
জেলার মঠাবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, সাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, খেতাছিড়া ও চকরগাছিয়া এ ৬ গ্রামের প্রায় ৬ শতাধিক, জেলার কাউখালী উপজেলার বেতকা, শিয়ালকাঠী ও পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৭৫/৮০ পরিবার, জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৫০ পরিবার, জেলার সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের কদমতলা ও একপাই জুজখোলা গ্রামের প্রায় ৬০ পরিবার ঈদ পালন করছেন।
কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের বেলতলা গ্রামের স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মারুফ হোসেন জানান, বেলতলার মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের ঈদের নামাজের ইমামতি করেন ওই মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন সিকদার পান্না। সেখানে সকাল ৮টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় শতাধিক পুরুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এ ছাড়া একই উপজেলার আয়রন গ্রামেও একটি ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা গেছে, জেলার মঠবাড়িয়ায় রবিবার (৩০ মার্চ) সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, মাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, চরকগাছিয়া, খেতাছিড়া, সদর ইউনিয়নের সবুজ নগর এ ৭ গ্রামে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খন্দকার বাড়ি জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় হয় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। স্থানীয়রা জানান, সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে স্থানীয় ৭টি মসজিদে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলার নাজিরপুরের শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মো.
তিনি আরো জানান, তারা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা শুরু করেছিলেন। আর সে অনুযায়ী গতকাল শনিবার (২৯মার্চ) তাদের ২৯টি রোজা পূর্ণ হওয়ায় আজ রবিবার তারা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।
উল্লেখ্য, শুরেশ্বর পীরের অনুসারীরা প্রতি বছর সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রমজান (ঈদ-উল-ফিতর) ও কোরবানীর (ঈদ-উল-আযহা) দুই ঈদ পালন করে থাকেন।
ঢাকা/তাওহিদুল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ র ন ম জ আরব র স থ উপজ ল র পর ব র রব ব র করছ ন মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
কেরানিগঞ্জে ৩ জনকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড, খুনি গ্রেপ্তার
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটন ও মূল আসামি মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে ঢাকার কদমতলী থানাধীন জুরাইন রেললাইন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হত্যার শিকার তিন জন হলেন- নুপুর (২৫), বিথী আক্তার (২৪) ও তার শিশু পুত্র রাফসান (৪)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি জানান, গত ২৫ এপ্রিল রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পূর্ব আগানগরে মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় নুপুরের মস্তক ও হাত-পা বিহীন দেহের খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২৭ এপ্রিল হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পোস্তগোলা ব্রিজের পূর্ব দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন ভাসমান অবস্থায় মৃতদের তিনটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। খণ্ডিত অংশের মধ্যে ছিল একটি পা ও দুইটি উরু।
পরে ঘটনাস্থলের পাশের একটি সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুলকে রাজধানীর জুরাইন রেললাইন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, নিহত বিথী আক্তার তার কারখানায় চাকরি করতো। চাকরির সুবাদে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তার সাথে ২০১৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
বিষয়টি তার আগের স্ত্রী রুমা জানতে পারলে সে পুনরায় বিথী আক্তারের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে। এতে বিথী আক্তার রুবেল নামে অন্য একটি ছেলেকে বিয়ে করে। ওই ঘরে তার রাফসান নামে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। ঘাতক মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুল পরে জানতে পেরে আবারো বিথী আক্তারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তাকে বিয়ে না করেই স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মীরেরবাগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তার সাথে সংসার করতে থাকেন।
মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল তার প্রথম স্ত্রী রুমাসহ রাজধানীর কদমতলী থানার জুরাইনে একটি বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। এই ঘটনাটি পরে তার প্রথম স্ত্রী আবার জানতে পেরে তার সাথে বিভিন্ন সময় ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এদিকে বিথী আক্তার মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুলকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
এ অবস্থায় গত ২৫ এপ্রিল সকালে মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুল বিথী আক্তারের বাসায় চলে যায়। এসময় তার সাথে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন হাওলাদার শিমুল গামছা দিয়ে বিথী আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার ঘটনাটি দেখে ফেলায় বিথীর শিশু সন্তান রাফসানকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে।
এসব ঘটনা দেখে ফেলে ওই ফ্ল্যাটের সাবলেটে ভাড়া থাকা নুপুর চিৎকার করলে তাকেও গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে মৃতদেহগুলো বাথরুমে নিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে বিভিন্ন প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে সে। রাফসানের ছয় টুকরা লাশ বস্তা বন্দি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বেয়ারা এলাকায় একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়।
নুপুরের খণ্ডবিখণ্ড লাশ রাতে মাকসুদা গার্ডেন সিটির সামনে ফেলে দেয়। বিথীর খণ্ডবিখণ্ড লাশ বস্তা বন্দী করে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ফেলে দেয়। পরে স্বাভাবিক অবস্থায় সে তার জুরাইনের বাসায় চলে যায়।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোববার রাতে শিশু পুত্র রাফসানের খণ্ডিত লাশ পেয়ারা পূর্ব পাড়া জৈনক মিন্টু মিয়ার জমির ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে বিথী আক্তার ও নুপুরের মস্তক এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাজাহারুল ইসলাম।
ঢাকা/শিপন/এস