চাঁদা না পেয়ে মাছ ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, গণপিটুনিতে নিহত হামলাকারী
Published: 4th, April 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারায় চাঁদা না পেয়ে আবদুর রাজ্জাক (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে আমিনুল ইসলাম (২২) নামে ওই হামলাকারী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাগমারা উপজেলার রনশিবাড়ি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ক্ষুব্ধ লোকজনের হামলায় পুলিশের উপপরিদর্শকসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।
নিহত মাছ ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক বাগমারার সীমান্তবর্তী নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গোয়ালবাড়ি গ্রামের মো মিঠুনের ছেলে। আমিনুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা মো.
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে মাছ বিক্রি করছিলেন রাজ্জাক। এ সময় তার কাছে টাকা চান আমিনুল। তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে পাশের কামারের দোকান থেকে ছুরি এনে রাজ্জাকের বুকে আঘাত করে সে। এতে ঘটনাস্থলেই মাছ ব্যবসায়ী নিহত হন। পরে ঘাতক আমিনুলকে আটক করে গণপিটুনি দেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে সেখানে যায় পুলিশ। আমিনুলকে পুলিশ থানায় আনার পথে তাকে ছিনিয়ে নেন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে ইট দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেন। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে আবদুর রাজ্জাক রনশিবাড়ি বাজারের মাছ বিক্রি শেষে নজরুলের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে একই গ্রামের আমিনুল ইসলাম দোকানে ঢুকে আবদুর রাজ্জাককে ছুরি দিয়ে বুকে আহত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে দৌড় দেন আমিনুল। তার আগেই মাছ বিক্রির সময় আমিনুল চাঁদা চান রাজ্জাকের কাছে। টাকা না দিলে তাকে হুমকি দিয়ে ছুরি আনতে কামারের দোকানে যান। এ সময় বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে চা পান করছিলেন রাজ্জাক।
স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে আমিনুলকে ধাওয়া করেন। এ সময় রনশিবাড়ি গ্রামের আবদুর রশিদের বাড়িতে তিনি আশ্রয় নেন। ক্ষুব্ধ লোকজন বাড়িটি ঘিরে রাখেন। খবর পেয়ে বাগমারা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। তবে লোকজনের বাঁধার মুখে পড়ে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। লোকজন কয়েক দফা বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা চালান। তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে পুলিশকে চলে যেতে বলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ক্ষুব্ধ লোকজন বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। বাধা দিলে উপপরিদর্শক সাদিকুল ইসলামসহ পুলিশের ছয় সদস্যকে লাঞ্ছিত ও মারধর করে ভেতরে ঢুকে পড়েন বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর বাইরে এনে মারধর করেন জনতা। একপর্যায়ে আমিনুল মারা যান।
বাগমারা থানার ওসি আরও জানান, দুজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণপ ট ন ন হত ছ র ক ঘ ত হত য আবদ র র জ জ ক ম ছ ব যবস য় ল ইসল ম আম ন ল ব গম র ল কজন এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা করে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই নারীসহ তিনজনকে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর মেহেদী, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খোকন হোসেন ও রিংকু বড়ুয়া, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন ও মুজিবুর রহমান। তাঁদের ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন জয়নাল আবদীন (২০), রুজিনা আক্তার (৩২) ও মোসাম্মৎ রূপধন (৪৮)। তাঁরা জয়নগর গ্রামেরই বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, রাতে ওই এলাকায় মোহাম্মদ আলমগীর নামের এক মাদক কারবারিকে ধরতে তারা অভিযান চালায়। আলমগীরকে আটক করা হলে স্থানীয় প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, এ ঘটনায় আহত এসআই তানভীর মেহেদী বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।