লাহোরকে চ্যাম্পিয়ন করানোর চ্যালেঞ্জ রিশাদের
Published: 5th, April 2025 GMT
রিশাদ হোসেনের ঈদের আনন্দ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দ্বিগুন করেছিল আগেই। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে তাকে অনুমতি দিয়েছে বিসিবি। পুরো আসরে খেলার অনাপত্তিপত্র পেয়েছেন এই লেগ স্পিনার।
এর আগেও পিএসএলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল তার। খেলার সুযোগ ছিল বিগ ব্যাশ, গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও। কিন্তু বিসিবি তাকে সেসবে অনুমতি দেয়নি। এবার আবেদনের কিছুদিন পরই বিসিবি তাকে পাকিস্তানে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে।
এজন্য যারপরনাই খুশি রিশাদ। নিজের আবেগ তাই লুকালেন না, “আলহামদুলিল্লাহ যে, এনওসি পাচ্ছি এবং যাচ্ছি পাকিস্তান। আমার মনে হয় না এর চেয়ে বড় খুশির কিছু আছে। যাচ্ছি, ভালো করার চেষ্টা করবো। টুর্নামেন্টটা চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসার চেষ্টা করবো।”
আরো পড়ুন:
‘প্রস্তুতি নিয়ে আগামী বছর পরীক্ষা দেব’- বিসিবিকে তামিম
বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করেছেন জাহানারা
আগামী ১১ এপ্রিল শুরু পিএসএলের দশম আসর। প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে তাকে দলে নিয়েছে লাহোর কালান্দার্স। পিএসএল দিয়ে দেশের বাইরের লিগে অভিষেক হতে পারে ২২ বছর বয়সী রিশাদের। দলটিতে নেই আর কোনো লেগ স্পিনার। রিশাদ লাহোরে কোচ হিসেবে পাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে।
গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্সের পর রিশাদ নজরে আসেন। পিএসএলেও নিজের ছাপ রাখতে চান তিনি, “আমি পিএসএলে যাচ্ছি এটা আমার জন্য সুযোগ। আমার ভবিষ্যতের জন্য ভালো। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও ভালো। আমি চেষ্টা করবো এখান থেকে যতটুকু নেওয়া যায়।”
“কন্ডিশন নিয়ে তো এত কিছু ভাবার নাই। ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করব। দলের যতটুকু প্রয়োজন, ওটা দেওয়ার চেষ্টা করব। পাকিস্তানের উইকেট হিসেবে, যতগুলো ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে খেলেছি এবং পাকিস্তানের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানের সম্পর্কে ধারণা আছে; এতটুক নিয়ে কাজ করছি। কে কোন জায়গায় ভালো খেলে, না খেলে; এসব আর কী।”– যোগ করেন রিশাদ।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক
রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।
চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।
বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ