রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের সবার শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। ১৩ জনের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক।

চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা হলেন ইকবাল (৪০); তাঁর মা মমতাজ বেগম (৭৫); স্ত্রী ইসরাত জাহান (৩৬); দুই মেয়ে ইসয়াত (৫) ও ইসতিমাম (১১) এবং ভাগ্নি মুশফিকা (২০)। আরও চিকিৎসা নিচ্ছেন মো.

ইউনুস মিয়া (৭৪); তাঁর স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৬০); ছেলে বুলবুল (৩৭) ও মো. আমিন (২৩); মেয়ে মোছা. শিল্পী (৪২); নাতি তালহা (৪) এবং আসবাবপত্রের দোকানের কর্মচারী শাকিব হোসেন (২২)।

বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক হারুন অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রত্যেকেরই শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মুশফিকা ও মমতাজকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিদের সাধারণ শয্যায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে কারও অবস্থাই শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় প্রচণ্ড ধোঁয়ায় একজন মারা গেছেন। তাঁর নাম আমিন উদ্দিন (৭৫)। তিনি যশোরের দক্ষিণ সুরমার আলী আকবরের ছেলে। আমিন উদ্দিন ভবনটির দ্বিতীয় তলায় আসবাবপত্রের একটি দোকান দেখাশোনা করতেন। তিনি রাতে সেখানেই ঘুমাতেন।

আসবাবপত্রের দোকানের মালিক আতিকুর রহমান বলেন, ভবনের নিচতলায় থাকা লেপ-তোশকের একটি দোকানে আগুন লাগে। এতে পুরো ভবনে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় তলায় থাকা আমিন উদ্দিন ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, আমিন উদ্দিনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

আজ সোমবার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে নাজিমউদ্দিন রোডের পাঁচতলা ভবনটির নিচতলায় আগুন লাগার খবর পাওয়া যায় বলে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে আগুন নেভায়।

শাহজাহান তাৎক্ষণিকভাবে প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বাসাগুলো থেকে মোট ১৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

সিমন্সের চোখে মিরাজের অসুস্থতা ‘মধুর সমস্যা’

গলের মেঘলা আকাশ আর টানা বৃষ্টির মাঝে বাংলাদেশ টেস্ট দলের প্রস্তুতি শুরু হলো রোববার। শুরুর দিনেই একটি দুশ্চিন্তা—অসুস্থতার কারণে অনুশীলনে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের চোখে এটি আবার ‘মধুর সমস্যা’।

বাংলাদেশ কোচের মতে, মিরাজের সমস্যা সুযোগ করে দেবে অন্য কারও। তবে মিরাজও যে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সেটিও জানিয়েছেন সিমন্স। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন মিরাজের সর্বশেষ অবস্থা, ‘গত দুই দিনে সে অনেকটাই ভালো আছে। আমরা দেখব সন্ধ্যায় ওষুধের পর সে কেমন থাকে। আশা করি, কাল অনুশীলন করতে পারবে এবং খেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’

সিমন্স যোগ করেছেন, ‘এটা (মিরাজের অসুস্থতা) নিশ্চয়ই চিন্তার। তবে একজনের সমস্যা অন্যজনের জন্য সুযোগ এনে দেয়। দলের সবাই চায় মিরাজ সুস্থ হয়ে উঠুক, কিন্তু তারা এ–ও জানে, যদি মিরাজ না-ও খেলতে পারে, তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটা সমস্যা, তবে সমস্যাটা মধুর।’

মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবেমেহেদী হাসান মিরাজ

এদিন অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও কথা বলেন সিমন্স। ২০১৩ সালে গলে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকের কাছে বড় কিছু প্রত্যাশা করছেন না কোচ। তাহলে কী চাওয়া সিমন্সের? বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘আমি চাই সে যেন খেলাটা উপভোগ করে। ওই ইনিংস যেমন সে আনন্দ নিয়ে খেলেছিল, এবারও যেন সেটাই করে, তা-ই চাই। মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবে।’

সম্প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কত্বে হঠাৎ পরিবর্তন এনে নাজমুল হোসেনের বদলে মিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। সিমন্স মনে করেন, টেস্টে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নাজমুলের ওপর পড়বে না, ‘আমি একেবারেই মনে করি না যে এটি ওকে প্রভাবিত করবে। মাঠে নামলে নাজমুল শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, বাইরের বিষয় আমরা দেখি। তাই এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।’

বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ