চট্টগ্রামে এক সড়ক ও দুটি স্থাপনা থেকে শেখ হাসিনা ও রাসেলের নাম বাদ
Published: 9th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নগরের এক সড়ক ও দুটি স্থাপনা থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট ভাই শেখ রাসেলের নাম বাদ দিয়েছে। এসব নাম পরিবর্তন করে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সিটি করপোরেশন। বিষয়টি আজ বুধবার জানা যায়।
গত ১৬ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পতন হওয়া সরকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নামে সিটি করপোরেশনের সড়ক, ভবন ও স্থাপনার নামকরণ পরিবর্তনের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। এরপর স্থাপনার বিদ্যমান নাম পরিবর্তন এবং নতুন নামকরণের বিষয়টি জানিয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন।
নাম পরিবর্তন করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরের জননেত্রী শেখ হাসিনা সড়কের নাম পরিবর্তন করে বিমানবন্দর সড়ক করা হয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চে নগরের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়ক ও ভিআইপি সড়ককে ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা’ সড়ক নামকরণ করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম নগরের আমবাগানে শেখ রাসেল পার্ককে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ওয়াসিম আকরামের নামে শহীদ ওয়াসিম আকরাম পার্ক করা হয়েছে। ২০১৯ সালে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই উদ্যান করেছিল সিটি করপোরেশন।
নগরের উত্তর কাট্টলীতে অবস্থিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করা হলে নতুন নামকরণ করা হয়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর স্টেডিয়ামের নামফলক খুলে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে সংস্কার ও মেরামতকাজ চলছে। এই কাজ শেষ হলে নতুন নামকরণ করবে সিটি করপোরেশন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।