সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও ১৬টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের করা এ–সংক্রান্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল ইসলাম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট এই ১৬টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য আদালতের কাছে তুলে ধরা হয়। ওই সব ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৮৮ লাখ ৮৮ হাজার ৭৬৬ টাকা। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, কামরুল ইসলামের ওই ১৫ ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা জমা হয়। অন্যদিকে এসব ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। বর্তমানে জমা আছে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

এদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে দুদক। ১১ ফেব্রুয়ারি ওই আবেদনের শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর নামে মামলা করে দুদক। দুদক বলছে, ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ার পর কামরুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

দুদক বলছে, কামরুল ইসলামের ছেলে তানজীর ইসলামের ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৫ টাকা এবং মেয়ে সেগুপ্তা ইসলামের নামে ১ কোটি ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৯২৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। তাঁর দুই সন্তানের নামে আরও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকতে পারে।

গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাঁকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে।

২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন কামরুল ইসলাম। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে তাঁকে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাস্ট ওয়েট করুন, কিছু দিনের মধ্যে ঘোষণা শুনবেন: আসিফ নজরুল
  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা