কলকাতার মডেল ও টিভি অভিনেত্রী ইধিকা পাল। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে। তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘কপালকুণ্ডলা’। স্টার জলসায় প্রচারিত এ ধারাবাহিকে ‘পদ্মাবতী’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। পরবর্তীতে ‘রিমলি’ ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তা ছাড়াও দুটি জনপ্রিয় ধারাবাহিকে খলনায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।

ছোট ক্যানভাস থেকে বড় পর্দায় পা রাখেন ইধিকা পাল। তবে কলকাতায় নয়, বাংলাদেশের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। হিমেল আশরাফ পরিচালিত এই সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেন ঢাকাই সিনেমার মেগাস্টার শাকিব খান।

 

আরো পড়ুন:

‘বিদায় রাফাহ্-গাজার জান্নাতি শহীদেরা’

গাজা নির্যাতিত মানুষের প্রতীক: শাকিব খান

‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় যখন ইধিকা পালকে কাস্ট করা হয়, তখন বাংলাদেশে পুরোপুরি অপরিচিত তিনি। ছোট পর্দার অভিনেত্রী হিসেবে কলকাতায় মোটামুটি পরিচিতি থাকলেও তা এপার বাংলার মানুষের কাছে খুব একটা কাজে দেয়নি। ফলে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় ইধিকা পাল কতটা ভালো পারফর্ম করবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় ছিল।

 

অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২৩ সালের ঈদুল আজহায় দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা। মুক্তির পরই কেটে যায় সংশয়। ইধিকা-শাকিবের রসায়ন মুগ্ধ করে ভক্ত-অনুরাগীদের। এ অভিনেত্রীর কিছু সংলাপ ভাসতে থাকে অন্তর্জালে। ইধিকা হয়ে উঠেন দর্শকদের প্রিয়তমা। মানুষের ভালোবাসা পেয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন এই নায়িকাও।

 

‘প্রিয়তমা’ সিনেমার সাফল্যের রেশ কাটার আগেই ইধিকা ডাক পান ওপার বাংলার জনপ্রিয় নায়ক ও তৃণমূলের সংসদ সদস্য দেবের। টলিউডের প্রথম সারির নায়ক দেব। বাংলাদেশের সুপারস্টারের সঙ্গে কাজের পরই ‘খাদান’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে পান দেবকে। শুরু হয় ইধিকাকে নিয়ে আলোচনা।

 

সুজিত দত্ত পরিচালিত ‘খাদান’ সিনেমা গত বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এ সিনেমার ‘কিশোরী’ গানটি তো শ্রোতাদের মুখে মুখে ফিরতে থাকে। প্রশংসিত হন ২৬ বছরের ইধিকা পাল। বক্স অফিসেও ঝড় তুলে সিনেমাটি।

 

‘খাদান’ সিনেমার ঝড় থামার আগেই আবার শাকিবের ডাক পান ইধিকা পাল। পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয়ের পরিকল্পনা ‘বরবাদ’ সিনেমা নির্মাণের। দ্বিতীয়বার ভাবার সময় নেননি ইধিকা। শুরু হয় শাকিবের সঙ্গে নতুন জার্নি। ধারাবাহিকভাবে এ সিনেমার লুক প্রকাশ করতে থাকেন সংশ্লিষ্টরা। তৈরি হতে থাকে দর্শক আকর্ষণ।

 

ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায় ইধিকা-শাকিবের দ্বিতীয় সিনেমা ‘বরবাদ’। মুক্তির পর জয়ধ্বনি শুরু হয় এই জুটিকে নিয়ে। বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলেছে। মুক্তির পর থেকে প্রেক্ষাগৃহ হাউজফুল যাচ্ছে। শাকিব-ইধিকার রসায়ন দারুণ প্রশংসা কুড়াচ্ছে। দর্শকদের ভালোবাসায় আবারো বিমোহিত এই নায়িকা।

 

ইধিকার ভাগ্যবদল শাকিব খানের হাত ধরে, তা কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করেছেন তিনি। ‘বরবাদ’ সিনেমার সাফল্যের পর এই অভিনেত্রী বলেন— “বাংলাদেশের মানুষ আমাকে চিনেছে শাকিব খানের জন্য। উনি যদি প্রিয়তমাতে কাজ করার সুযোগ আমাকে না করে দিতেন, তাহলে হয়তো আমি ওই সিনেমাটাই করতে পারতাম না। আর যদি ওই সিনেমাটা না করতে পারতাম তাহলে বাংলাদেশের মানুষ আমাকে চিনতেই পারতেন না।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র য়তম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ