রান করতে করতে নিজেকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে, কোনো ম্যাচ খেলতে নামার আগে রেকর্ড তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। রান তাড়া করতে নামলে তো কথাই নেই। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার উদ্দেশ্যেই যেন ব্যাটিংয়ে নামেন।

আইপিএলে আজ আরেকবার রান তাড়া করতে নেমে বিরাট কোহলি পেয়ে গেলেন আরেকটি অপরাজিত ফিফটির দেখা। এতেই হয়ে গেল অনন্য কীর্তি। এশিয়ার প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ১০০টি ফিফটি করলেন কোহলি। এই কীর্তিতে সব মিলিয়ে তিনি দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান। ১০৮ ফিফটি নিয়ে শীর্ষে আছেন ডেভিড ওয়ার্নার।

৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৫ বলে কোহলির অপরাজিত ৬২ রানের আগে ঝোড়ো ফিফটি (৩৩ বলে ৬৫) করেছেন তাঁর উদ্বোধনী সঙ্গী ফিল সল্ট। তাতে রাজস্থান রয়্যালসকে হেসেখেলে হারিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

রাজস্থানের দুর্গ হিসেবে পরিচিত জয়পুরের সাওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে এবারের আইপিএলে এটিই ছিল প্রথম ম্যাচ। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা রাজস্থান ৪ উইকেটে করেছিল ১৭৩ রান। বেঙ্গালুরু লক্ষ্য টপকে গেছে ৯ উইকেট আর ১৫ বল বাকি রেখে।

এ জয়ের পর ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে উঠে এল বেঙ্গালুরু। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রাজস্থান রয়ে গেল সাতেই।  

রাজস্থানের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল। খুব বেশি উইকেট না হারালেও বেঙ্গালুরু বোলারদের নিয়ন্ত্রিত ও বুদ্ধিদীপ্ত ‘স্লোয়ারের’ কারণে হাত খুলে খেলতে পারেননি রাহুল দ্রাবিড়ের শিষ্যরা। বেঙ্গালুরুর হয়ে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন জশ হ্যাজলউড, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার ও যশ দয়াল।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সল্টের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতেই বিনা উইকেটে ৬৫ রান তুলে ফেলে বেঙ্গালুরু। নবম ওভারে দলীয় ৯২ ও ব্যক্তিগত ৬৫ রানে সল্ট আউট হলেও ততক্ষণে বেঙ্গালুরু জয়ের ভিত পেয়ে যায়। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে এই ইংলিশ ব্যাটসম্যানের হাতে।

১৫তম ওভারে তৃতীয় বলে রাজস্থানের লঙ্কান লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ছক্কা মেরে ‘শততম অর্ধশতকে’ পৌঁছান কোহলি। এবারের আইপিএলে এটি তাঁর তৃতীয় ফিফটি, যার দুটিতেই তিনি অপরাজিত।

সল্ট আউট হওয়ার পর কোহলিকে দারুণ সঙ্গে দিয়েছেন দেবদূত পাড়িক্কাল। তিনি অপরাজিত থাকেন ৪০ রানে। রাজস্থানের হয়ে একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার কুমার কার্তিকেয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৭৩/৪ (জয়সোয়াল ৭৫, জুরেল ৩৫, পরাগ ৩০; হ্যাজলউড ১/২৬, ক্রুনাল ১/২৯, ভুবনেশ্বর ১/৩২, দয়াল ১/৩৬)।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ১৭.

৩ ওভারে ১৭৫/১ (সল্ট ৬৫, কোহলি ৬২*, পাড়িক্কাল ৪০*; কার্তিকেয়া ১/২৫)।

ফল: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ৯ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ফিল সল্ট।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর জ ত উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ