কাঠ-বাঁশের ওপর কাগজ দিয়ে তৈরি একটি ব্যাঙকে বর সাজিয়ে নতুন কলাভবন থেকে বিয়ের গান বাজিয়ে পুরোনো কলাভবনে নিয়ে যায় বরপক্ষ। বিয়ের রীতি অনুযায়ী গেট আটকায় কনেপক্ষ। এরপর বরের আসরে গিয়ে বসে বরপক্ষ। কিছুক্ষণ পর পুরোনো কলাভবন থেকে কাগজের তৈরি কনে ব্যাঙ নিয়ে মঞ্চে আসে কনেপক্ষ। দুই পক্ষের মধ্যে রসিকতা ও সচেতনতামূলক বাক্যবিনিময় হয়।

কনেপক্ষ বরপক্ষের কাছে দেনমোহর হিসেবে ১০ কোটি টাকা দাবি করে। যেহেতু ব্যাঙের বিয়ে, তাই ঝিঁঝিপোকাতেই দেনমোহর সীমাবদ্ধ রাখে বরপক্ষ। এরপর কনেপক্ষ বরপক্ষকে ‘কিপটে’ আখ্যা দিয়ে রসিকতা করে। এরপর পুরোহিত তন্ত্রমন্ত্র পড়ে ব্যাঙের পান-চিনি (বিয়ে) সম্পন্ন করেন।

আজ রোববার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো কলাভবন এলাকায় চৈত্রসংক্রান্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে ব্যাঙের পান-চিনি নামে ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, মঞ্চে দুই পক্ষের মধ্যে কথোপকথন ছিল রসিকতা ও সচেতনতামূলক। ব্যাঙ যে প্রাণ-প্রকৃতির জন্য কতটা উপকারী, সেটা তুলে ধরা হয়। ব্যাঙ রক্ষায় সবাইকে সচেতনতার আহ্বান জানানো হয়।

কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন মোজাম্মেল হক বলেন, ব্যাঙ প্রাণিজগতে গুরুত্বপূর্ণ একটি একক। ব্যাঙ মানুষের জীবনে অনেক উপকার করে। প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল মানুষ। এসব প্রজাতিকে যেন বিনষ্ট না করে রক্ষা করা হয়। কারণ, প্রাণীরা জীবনচক্রের মাধ্যমে কোনো না কোনোভাবে মানুষের উপকার করে থাকে।

বাংলা বছরের সমাপনী মাস চৈত্র। শেষ দিনটিকে চৈত্রসংক্রান্তি বলা হয়। দিনটি স্মরণীয় রাখতে ব্যাঙের বিয়ে ছাড়াও লাঠিখেলা, জলরং খেলা, সংক্রান্তি নৃত্য, স্বরচিত বয়ান, ভবের গানের আয়োজন করা হয়। মানিকগঞ্জের সরদারবাড়ি নামক একটি দল লাঠিখেলা পরিবেশন করে। গানের তালে তালে নেচে-গেয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিতে অনুষ্ঠিত লাঠিখেলা উপভোগ করেন দর্শক। এরপর জলরং খেলায় মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। সহপাঠীরা একে অপরকে রং মাখিয়ে দিতে আনন্দে মেতে ওঠেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে ঐতিহ্যবাহী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বেলা তিনটার দিকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান।

সার্বিক বিষয়ে পয়লা বৈশাখ ও চৈত্রসংক্রান্তি উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক মো.

আশরাফুল হাবীব বলেন, ‘আমরা নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ দুই দিনব্যাপী চৈত্রসংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখের আয়োজন করেছি। আয়োজনে আমরা ঐতিহ্যবাহী অনেকগুলো নাটক, লাঠিখেলা রেখেছি। যেগুলো আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যায়। কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিনের অনুপ্রেরণায় ব্যাঙের পান-চিনি অনুষ্ঠান হয়েছে। গাজায় গণহত্যাসহ সারা পৃথিবীতে অসহিষ্ণুতা চলছে। আমরা চাই, নতুন বছরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধুর সম্পর্কটা যেন পুনঃস্থাপিত হয়। আমরা একটি উন্নয়নমুখী ও মানবিক বাংলাদেশ চাই। সেই লক্ষ্যকে ধারণ করে আমরা এবারের উৎসবের আয়োজন করেছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ত রস ক র ন ত অন ষ ঠ ন বরপক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা

লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’

বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’

পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’ 

পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।

২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
  • ১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
  • নদীতে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ, চার সহপাঠী আটক
  • টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
  • মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা