দেশের বাইরে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজের অভিষেক দারুণভাবে রাঙিয়েছেন রিশাদ হোসেন। পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের হয়ে বল হাতে ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন এই লেগ স্পিনার। তাতে লাহোরের অনায়েস জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ম্যাচ শেষে ফ্রাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে বাংলাদেশি তরুণ ক্রিকেটারকে প্রশংসায় ভাসানো হয়। দলের ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে খেতাবও পেয়েছেন ২২ বছর বয়সী ক্রিকেটার।

সপ্তম ওভারে বোলিং করতে এসে নিজের প্রথম ওভারে ৭ রান দেন রিশাদ। হজম করেননি কোনো বাউন্ডারি। দ্বিতীয় ওভারে বাউন্ডারি হজমের সঙ্গে উইকেটেরও স্বাদ পান। তার চতুর্থ বলে ছক্কা ওড়ান রাইলি রুশো। পরের বল একটু দ্রুতগতিতে সিমের ওপর দিয়েছিলেন রিশাদ। তাতে উইকেট হারান রুশো। বিপজ্জনক এই ব‌্যাটসম‌্যানকে ফিরিয়ে রিশাদ দলের জয়ের পথ মসৃণ করেন।

তৃতীয় ওভারে দেন ৯ রান। চতুর্থ ওভারে পান জোড়া সাফল‌্য। মোহাম্মদ আমিরকে বোল্ড করার পর আবরার আহমেদকে ডিপ স্কয়ার লেগে তালুবন্দি করান। তাতে ৩১ রানে রিশাদের প্রাপ্তি ৩ উইকেট। যেখানে ছিল ১০ ডট বল। এর আগে শেষ দিকে ব‌্যাটিংয়ে নেমে ১ বল খেলার সুযোগ পান। ১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করল ব্ল্যাক ক্যাপসরা

আবারো জরিমানা গুনলো পাকিস্তান

রুশোকে আউট করে ম‌্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন রিশাদ। তাইতো তাকে ‘গেম চেঞ্জার’ উপাধি দিয়েছেন লাহোর কালান্দার্সের অন্যতম মালিক ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সামিন রানা।

ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে ফিরে সামিন বলেন, ‘‘আমার বাংলাদেশি ভাইকে নিয়ে আমি কী বলতে পারি.

..রিশাদ, আমার মনে হয় তুমি গেম চেঞ্জার। তুমি যেভাবে বল করেছ, তা দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে এবং বুঝিয়ে দিয়েছ যে এই দলের বোলিং আক্রমণই এবারের টুর্নামেন্টে সেরা।’

এর আগে রিশাদের পারফরম্যান্স নিয়ে লাহোরের অধিনায়ক শাহীন শাহ আফ্রিদি বলেছেন, ‘‘আমরা এমন এক বোলারকে নিতে চেয়েছিলাম, যে মাঝের ওভারগুলোয় উইকেট এনে দেয়। তাই আমরা রিশাদকে নিয়েছি।’’

ম্যাচ শেষে দলের উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংসও রিশাদকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘‘আমার মনে হয় রিশাদ এসেই যেভাবে খেলেছে, তা দারুণ। সে অসাধারণ বল করেছে, বল স্পিন করাতে চেয়েছে। এই সংস্করণে কবজির স্পিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওর নেওয়া রাইলি রুশোর উইকেট ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমি ওর পারফরম্যান্সে খুব খুশি।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়

অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।

তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।

ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।

প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।

তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।

এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।

তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।

চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।

এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।

২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।

এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।

অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন অধিনায়ক কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তামিমের
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
  • ব্রাজিলে আলোকাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • ব্রাজিলে আলো কাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির 
  • কোচ কাবরেরার পদত্যাগ দাবি, অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যৎ