চোর সন্দেহে গণপিটুনির ২ দিন পর যুবকের মৃত্যু
Published: 17th, April 2025 GMT
চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে গুরুতর আহত সাগর মোল্লা (২৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সালতা গ্রামে সাগর মোল্লাকে পেটানো হয়। নিহত সাগর একই উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের সিরাজ মোল্লার ছেলে।
নিহতের বাবা সিরাজ মোল্লা বলেন, ‘‘আমরা কাজের সুবাদে মাদারীপুরে থাকি। গত রবিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে আমাদের গ্রামের বাড়ি ডুমুরিয়া যাওয়ার উদ্দেশে সাগর বাসা বাড়ি থেকে বের হয়। সালতা গ্রাম দিয়ে যাওয়ার সময় ওই গ্রামের আসিফ খান, আল আমিন মোল্লাসহ কমপক্ষে ২০ জন চোর সন্দেহে সাগরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে সাগরকে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে মারা যায়।’’ তিনি এ হত্যার বিচার দাবি করেন।
আরো পড়ুন:
ধান মাড়াইয়ের সময় বজ্রপাত, নারীর মৃত্যু
মধ্যপাড়া পাথর খনির ভূগর্ভে শ্রমিকের মৃত্যু
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত রবিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার সালতা গ্রামের মজিবর খানের ছেলে আসিফ খানের বাড়িতে প্রবেশ করে সাগর। এ সময় বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে ধরে ফেলে এবং উত্তেজিত জনতা সাগরকে গণপিটুনি দেয়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মারা যান।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুস মিয়া জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/পলাশ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ রনদ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।