মহাকাশে দূর থেকে পৃথিবীকে ফ্যাকাশে নীল বিন্দুর মতো দেখা যায়। এ কারণেই নীল বিন্দু নামের তকমা পেয়েছে আমাদের পৃথিবী। ১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৬০০ কোটি কিলোমিটার দূর থেকে ভয়েজার ১ মহাকাশযান পৃথিবীর একটি ছবি তোলে। সেই ছবিতে পৃথিবীকে সুবিশাল মহাবিশ্বে একটি অস্পষ্ট ফ্যাকাশে নীল বিন্দুর মতো দেখা যায়। সেই বিখ্যাত ছবির নামকরণ করা হয় ‘পেল ব্লু ডট’ বা ফ্যাকাশে নীল বিন্দু। সেটি শুধু সাধারণ কোনো বৈজ্ঞানিক ছবি নয়, মানব অস্তিত্বের ক্ষুদ্রতা ও গুরুত্বের গভীর দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দেয়।

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল সাগান ভয়েজার ১ খেয়াযানের ক্যামেরা ঘুরিয়ে পৃথিবীর ছবি তোলার প্রস্তাব দেন। ভয়েজার ১ তখন প্লুটো কক্ষপথ ছাড়িয়ে বহুদূরে ছুটে যাচ্ছিল। সাগান মনে করেছিলেন, দূর থেকে পৃথিবীকে দেখলে আমাদের গ্রহের আসল স্থান ও মহাবিশ্বে আমাদের ক্ষুদ্রতা আমরা উপলব্ধি করতে পারব। নাসার বিজ্ঞানীরা এই প্রস্তাবের প্রথম দিকে বেশ দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। সূর্যের আলোর কারণে ক্যামেরার সেন্সর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিল। কার্ল সাগানের দৃঢ় আগ্রহের কারণেই ঐতিহাসিক ছবিটি তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরও পড়ুনপৃথিবীর গভীরে কী রয়েছে০২ নভেম্বর ২০২৩

ছবিটি প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। সুবিশাল মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের গ্রহের অসীম ক্ষুদ্রতা ও নিঃসঙ্গতা সেই ছবিতে গভীরভাবে দেখা যায়। কার্ল সাগান ছবিটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তার বিখ্যাত বই ‘পেল ব্লু ডট: আ ভিশন অফ দ্য হিউম্যান ফিউচার ইন স্পেস’ প্রকাশ করেন। বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ওই ক্ষুদ্র বিন্দুটিই আমাদের ঘর, আমাদের পৃথিবী। সেখানেই আমাদের পরিচিত সবাই, যাদের আমরা ভালোবাসি, যাদেরকে চিনি, যাদের কথা আমরা শুনছি—সব মানুষই যারা একসময় ছিল, সবার জীবন এখানে অতিবাহিত হয়েছে।’

আরও পড়ুনএক সেকেন্ডের জন্য পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হলে কী হতে পারে০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

জ্যোতির্বিদেরা এই ছবিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। এই ছবির মাধ্যমে মানুষ হিসেবে আমাদের অহংকার ও আত্মকেন্দ্রিকতা চূর্ণ হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এক অসীম শূন্যতার মধ্যে ভাসমান একটি ক্ষুদ্র ধূলিকণা আমরা, তা এই ছবি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।

ছবিটি কেবল দার্শনিক বা আবেগের দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই ছবি প্রমাণ করে দূর মহাকাশ থেকেও একটি গ্রহকে আলোকরশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব। ভবিষ্যতে অন্যান্য নক্ষত্রমণ্ডলে প্রাণের সন্ধান করার ক্ষেত্রে এ ধারণাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ছবিটি ভয়েজার ১ মহাকাশযানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলা যায়। এত দূর থেকে একটি দুর্বল আলোর উৎসকে ক্যামেরাবন্দী করা এবং ১৯৯০ সালে সেই ডেটা পৃথিবীতে প্রেরণ করা—নিঃসন্দেহে এক অসাধারণ বৈজ্ঞানিক কৃতিত্ব।

সূত্র: অ্যাস্ট্রোগ্রাফি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বলিউডের প্রথম কোটি রুপি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতা কে?

ভারতীয় অনেক অভিনেতাই এখন একটি সিনেমা জন্য ১০০-৩০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। এখন প্যান-ইন্ডিয়ার সিনেমাগুলো অনেক বড় বাজেটে নির্মিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে বড় বড় তারকাও। কিন্তু জানেন কি বলিউডের কোন অভিনেতা প্রথম এক কোটি রুপি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন?  

সিয়াসাত ডটকমের তথ্য অনুসারে, ১৯৯০ সালে প্রযোজক কে. সি. বোকাদিয়া চলচ্চিত্র পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। তার নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘আজ কা অর্জুন’। তার স্বপ্ন ছিল তার সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করবেন অমিতাভ বচ্চন। এরপর পরিচালক অমিতাভের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন। ম্যানেজার জানান, অমিতাভের পারিশ্রমিক ৮০ লাখ রুপি। 

প্রযোজক কে. সি. বোকাদিয়া জানতেন—অমিতাভের পারিশ্রমিক ৭০ লাখ রুপি। তারপরও বোকাদিয়া পিছু না হটে, সবাইকে অবাক করে ১ কোটি রুপি পারিশ্রমিক দেওয়ার প্রস্তাব দেন। বলিউডের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো অভিনেতাকে এত বড় অঙ্কের পারিশ্রমিকের প্রস্তাব দেওয়া হয়।  

আরো পড়ুন:

‘সাইয়ারা’ কেন এতটা সাড়া ফেলেছে?

সারা আলীর নতুন প্রেমিককে কতটা জানেন?

অমিতাভ বচ্চনকে ১ কোটি রুপি পারিশ্রমিকের প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তা নেননি। বলিউড শাহেনশাহ তার যা পারিশ্রমিক অর্থাৎ ৭০ লাখ রুপি নিয়েছিলেন। পরে সিনেমাটির শুটিংয়ের সময়ে প্রযোজক-পরিচালক বোকাদিয়ার সঙ্গে অমিতাভের ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

ক্রাইম-ড্রামা ঘরানার ‘আজ কা অর্জুন’ সিনেমায় অমিতাভের বিপরীতে অভিনয় করেন জয়া প্রদা। তাছাড়াও অভিনয় করেন—রাধিকা, সুরেশ ওবেরয়, কিরন কুমার, অনুপম খের, অমরিশ পুরি প্রমুখ। ১৯৯০ সালের ১০ আগস্ট প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় সিনেমাটি। সাড়ে ৩ কোটি রুপি বাজেটের এই সিনেমা বক্স অফিসে আয় করে ১০ কোটি রুপি। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বলিউডের প্রথম কোটি রুপি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতা কে?