‘ও’ পজিটিভের বদলে ‘বি’ পজিটিভি রক্ত পুশ, রোগীর মৃত্যু
Published: 19th, April 2025 GMT
মানিকগঞ্জে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় চিকিৎসাধীন এক রোগীর শরীরে ‘ও’ পজিটিভের বদলে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত পুশ করায় সেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে রক্ত দেওয়ার পর রাত ১০টার দিকে রোগীর মৃত্যু হয়। নিহত ওই রোগীর নাম মো. বিল্লাল। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খাগড়াকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে, গত বুধবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
আরো পড়ুন:
চোর সন্দেহে গণপিটুনির ২ দিন পর যুবকের মৃত্যু
ধান মাড়াইয়ের সময় বজ্রপাত, নারীর মৃত্যু
রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে আমাদের ভুল রক্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটি এনে নার্সের কাছে দেওয়ার পর নার্সরা বলেন, ডাক্তারের অর্ডারপত্র লাগবে। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ডাক্তার রক্ত দেখে অর্ডারপত্র দিয়েছেন। এরপর নার্সরা রোগীর শরীরে সেটি পুশ করেন। এরপর থেকেই রোগীর সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। আমরা তখনো বুঝিনি যে রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া হয়েছে। পরে বাইরের একজন লোক বলেন, রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া হচ্ছে। এরপর আমরা হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তারদের অনেক ডাকাডাকি করলেও তারা এসে রোগীর কোনো চিকিৎসা দেননি। তারা তড়িঘড়ি করে সেই রক্তের ব্যাগ ও রক্ত সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে চলে যান। পরে রাত ৮টার দিকে আরেকজন ডাক্তার এসে আমাদের রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমরা বলেছি, রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার মত অবস্থা আমাদের নেই। এটা একটা সরকারি মেডিকেল, আমাদের রোগীর চিকিৎসা এখানেই করেন। তারপর তারা রোগীকে আর কোনো চিকিৎসা দেয়নি। এটি ভুল রক্ত নাকি সঠিক রক্ত সেটি বোঝার ক্ষমতা তো আমাদের নেই। তারা তিন জায়গায় চেক করে রক্ত দিয়েছে। এক জায়গায় ভুল হতে পারে, তিন জায়গায় তো ভুল হওয়ার কথা না। তাদের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.
তিনি আরো বলেন, ‘‘রোগীর শরীরে খুব বেশি রক্ত যায়নি। তবে, কাগজপত্র না দেখে রক্ত পুশ করা ঠিক হয়নি। এটি একটি মারাত্মক ভুল।’’
রোগীর মৃত্যু সনদে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা উল্লেখ করা হয়েছে।’’ ভুল রক্ত পুশ করার বিষয়টি উল্লেখ না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এটি করা হয়েছে।’’
এ বিষয়ে জানতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ঐশী ও মেডিকেল অফিসার ডা. নূরজাহানকে খুঁজলেও পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, ‘‘এ ঘটনায় এখনো আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/চন্দন/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত ম ন কগঞ জ ন কগঞ জ ম চ ক ৎসক আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।