আনচেলত্তির উত্তরসূরি হওয়ার ব্যাপারটা গুজন- আলোনসো
Published: 19th, April 2025 GMT
রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্থিনো পেরেজের একটাই নীতি- শিরোপা জিতাতে না পারা কোচকে পরবর্তী মৌসুমে দরকার নেই। সেই নীতি কিংবা রাজনীতির শিকার হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রিয়ালের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তি। গুঞ্জন আছে সেই শূন্যস্থান পূরণে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন ক্লাবটির সাবেক মিডফিল্ডার এবং বর্তমান বেয়ার লেভারকুজেনের কোচ জাবি আলোনসো। তবে ৪৩ বছর বয়সী স্প্যানিশ কোচ এসবকে (রিয়ালের সাথে চুক্তি) গুঞ্জন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) আলোনসোকে রিয়ালে কোচিংয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে তার দল (লেভারকুজেন) যেহেতু জার্মান বুন্দেসলিগার শিরোপা ধরে রাখার ক্ষেত্রে অনিশ্চিত, তাই এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলার সঠিক সময় নয়।
আরো পড়ুন:
ব্রাজিলে যাবেন আনচেলত্তি, রিয়ালের দায়িত্ব নিবেন কে?
রিয়ালের প্রত্যাবর্তনের কথা ভুলে যেতে বললেন আর্তেতা
রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পাশাপাশি লা লিগার শিরোপাও হাতছাড়া করে ফেলেছে প্রায়। এই অবস্থায় স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে যে, মৌসুম শেষে আনচেলত্তি ক্লাব ছাড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে আলোনসোকেই সবাই তার উত্তরসূরি হিসেবে চাইছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ কোচের চেয়ারটা জড়িয়েই যখন আলাপ, তখন সবাই নিজের আগ্রহের কথা অকপটে স্বীকার করে ফেলার কথা। তবে আলোনসো এক্ষেত্রে একদম ভিন্ন, “এটা ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলার উপযুক্ত সময় নয়। আমরা মৌসুমের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আছি। আমি গুজব আর জল্পনা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমি বুঝি এসব হচ্ছে, কিন্তু আমার কাছে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বর্তমান মুহূর্তে আমাদের দলের কী হচ্ছে।”
লেভারকুজেনের ২০২৩-২৪ মৌসুমে ঘরোয়া লিগে অপরাজিত থেকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লিগ শিরোপা জিতে। তবে সেই ফর্ম তারা ধরে রাখতে পারেনি। তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতেই বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে। তারপর ডিএফবি পোকালের (জার্মান কাপ) সেমিফাইনালে তারা জার্মান তৃতীয় স্তরের দল আরমিনিয়া বিলেফেল্ডের কাছে বিশ্বয় জাগিয়ে হেরে যায়। এছাড়া গত সপ্তাহে ইউনিয়ন বার্লিনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বায়ার্নের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমানোর সুযোগও হাতছাড়া করে।
আলোনসো বলেন, “এখনো পাঁচটি ম্যাচ বাকি। আমাদের ইচ্ছা আগের মতোই আছে। ইউনিয়নের বিপক্ষে গত শনিবারের ড্র ম্যাচের পর আমাদের হাতে পুরো সপ্তাহ ছিল খেলোয়াড়দের সঙ্গে ট্রেনিং ও কথা বলার জন্য। আমরা জানি, সেটা আমাদের সেরা ম্যাচ ছিল না। এজন্যই আমরা রোববার (২০ এপ্রিল) প্রমাণ করতে চাই যে আমরা আরও ভালো খেলতে পারি। বলা সহজ, কিন্তু আমাদের সেটা মাঠে দেখাতে হবে।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরিতে না ফেরালে রাজপথ ছাড়বেন না ইআরপিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা
পাঁচ মাস ধরে বেতন নেই। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ, কেউ আবার চাকরির বয়সসীমা পার করে এখন আর নতুন কোথাও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই প্রকল্প শেষের অজুহাতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন তারা—যারা ২০২০ সালের করোনা মহামারির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এই অবস্থায় নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অবিলম্বে বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ারডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের প্রধান দাবি হলো স্থায়ীকরণের মাধ্যমে চাকরি বহাল রাখতে হবে এবং রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেইসঙ্গে গত চার মাসের বকেয়া ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলবে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভরত কর্মীদের একজন বলেন, সরকারের ডাকেই তো আমরা এসেছিলাম। ভয়ঙ্কর সময় ছিল সেটা। তখন যদি পেছনে না ফিরে মানুষকে সেবা দিতে পারি, আজ যখন একটু স্থিতি এসেছে—তখন কেন আমরা উপেক্ষিত হবো? ৫ মাস ধরে একটা টাকাও পাইনি, পরিবার চালানো দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিপসমে কর্মরত ইআরপিপির মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু সুফিয়ান বলেন, প্রায় পাঁচ বছর এই প্রকল্পে কাজ করেছি। এখন বয়স ৩৫ ছাড়িয়েছে। সরকারি চাকরির আবেদনের শেষ সীমা পেরিয়ে গেছি। এখন আমাদের বাদ দিয়ে নতুন অদক্ষ জনবল নেয়ার চেষ্টা চলছে। এটা শুধু অবিচার না, আমাদের মর্যাদায় আঘাত।
ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সেন্টারের ডাটা অপারেটর আব্দুর রহমান বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা, স্কুলের বেতন দিতে পারিনি। স্ত্রী-সংসার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি। করোনার সময় এই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাকেই আমি কাজে গিয়েছিলাম, এখন সেই অধিদপ্তরের সিঁড়িতেই বসে থাকতে হচ্ছে দাবি আদায়ের জন্য।
ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কর্মরত এসব স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, করোনার সময় গড়ে তোলা আরটি-পিসিআর ল্যাব, ডেডিকেটেড আইসিইউ বা আইসোলেশন ইউনিটে তারাই প্রথম দিন থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ আজ তাদের বাদ দিয়ে সেই পদে নতুন লোক নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে।
তারা বলছেন, আমরা চাকরি ভিক্ষা চাই না। আমরা যেটুকু প্রাপ্য, সেটুকু চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চলবে, তবে আমাদের চাকরি কেড়ে নেয়া হলো কেন? আমাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না করে অন্যদের সুযোগ দেওয়া মানে অবিচারকে পুরস্কৃত করা।