মাল্টিপ্লেক্সে ১১ থেকে ২৮, সিঙ্গেল স্ক্রিনেও তিনগুন বাড়ল জংলির হল
Published: 19th, April 2025 GMT
ঈদের তিন সপ্তাহ পরও হলেও এখনো উৎসবের আমেজ ধরে রেখেছে ঈদের সিনেমাগুলো। প্রথম দিকে সিনেপ্লেক্সে কম শো পেলেও সময়ের সঙ্গে বেড়ে চলেছে ‘জংলি’ সিনেমার চাহিদা। তৃতীয় সপ্তাহে আরও বাড়ছে শোর সংখ্যা।
মুক্তির পর থেকে দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে সিয়াম আহমেদ অভিনীত জংলি। সব শো হাউসফুল যাচ্ছিল। অনেকে টিকিট না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। দর্শকদের চাহিদা পূরণ করতে দ্বিতীয় সপ্তাহে জংলির শো বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। তৃতীয় সপ্তাহে এসে আরও বাড়ল প্রদর্শনীর সংখ্যা। আজ থেকে স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখা মিলিয়ে ২১টি শো চলবে প্রতিদিন। এ ছাড়া যমুনা ব্লকবাস্টারে চার ও লায়ন সিনেমাসে তিনটি করে মাল্টিপ্লেক্সে মোট ২৮টি শো চলবে জংলি সিনেমার। যা শুরু হয়েছিল মাত্র ১১টি শো দিয়ে।
শুধু মাল্টিপ্লেক্সেই নয়,সিঙ্গেল স্ক্রিনেও বরবাদের পর শুক্রবার থেকে সর্বোচ্চ হলে চলছে জংলি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি জানান, ‘মুক্তির শুরুতে জংলি সিঙ্গেল স্ক্রিনে মাত্র তিনটি হলে চলেছে। আজ থেকে দেশের ২১টি সিঙ্গেল স্ক্রিনে একযুগে চলবে জংলি। সিঙ্গেল স্ক্রিনের হিসেবে বরবাদের পরই এখন জংলি সর্বাধিক হলে চলছে। আমার বিশ্বাস জংলির যে দর্শক চাহিদা দেখছি। তাতে পুরোনো অভিজ্ঞতা থেকে বলছি জংলি সত্যিই লম্বা রেসের ঘোড়া। আমি পরাণ পবেশনার দায়িত্বে ছিলাম। সে ছবির বেলায় এমন দেখেছি। আশা করি জংলিও পরাণের মতই আরেকটি হিট সিনেমা হতে যাচ্ছে।’
এদিকে তৃতীয় সপ্তাহে এসে মাল্টিপ্লেক্সে শাকিব খান অভিনীত বরবাদের শো চলছে ৩৫টি। আর সিঙ্গেল স্ক্রিন রয়েছে শতাধিক।
এদিকে জংলি সিনেমার আয়ের হিসাব প্রকাশ করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়া। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে, প্রথম ১৬ দিনে জংলির আয় প্রায় ২ কোটি ৬ লাখ টাকা। দেশে তুমুল চাহিদার মধ্যে ২৫ এপ্রিল থেকে বিদেশে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। জংলি সিনেমায় সিয়াম আহমেদের সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন শবনম বুবলী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, শিশুশিল্পী নৈঋতা প্রমুখ।
নির্মাতা এম রাহিম বলেন, ‘জংলি এখন প্রতিটি পরিবারের সিনেমা হয়ে উঠেছে। তাদের এই ভালোবাসা কখনো ভোলার নয়। পরিবারের সবাই একসঙ্গে হাসছে, একসঙ্গে কাঁদছে বাংলা সিনেমা দেখে; জংলি দেখে। আমরা নিশ্চিত যে আরও হাজারো-লাখো পরিবারের হাসি-কান্নার কারণ হব।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম স য় ম আহম দ ব বল
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।