নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে নাহিদ রানাকে তুলে ধরলেন তাতে বার্তা স্পষ্ট, আগে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা খেলুক তাকে, তারপর না হয় মন্তব্য করা যাবে। রীতিমতো বাংলাদেশের অধিনায়ক ‘খোঁচাই’ দিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের। যার শুরুটা অবশ্য সফররত জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামসের থেকে।

বাংলাদেশ পেস বোলিংয়ের বিজ্ঞাপন নাহিদ। বর্তমান সময়ে দ্রুত গতির যে সমস্ত বোলার ক্রিকেট বিশ্বের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন, নাহিদ তাদের মধ্যে অন্যতম। জোরে বলিং করতে পারার সক্ষমতা দিয়ে নাহিদ সুনজরে এসেছেন সবার। লাল বলে তাকে খেলতে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। জিম্বাবুয়ের জন্যও ডানহাতি পেসার হতে পারেন হুমকি। কিন্তু তাকে নিয়ে তেমন কোনো চিন্তিত মনে হলো না উইলিয়ামসের।

আরো পড়ুন:

টেস্ট সংস্কৃতির জন্য ভাবনার বদল চাইলেন শান্ত

বিবিসির প্রতিবেদন
ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামস বলেছিলেন, ‘‘এখনকার দিনে অনেক বোলারই আছে দ্রুতগতিতে বল করতে পারে। দুনিয়ায় শুধু একজনই জোরে বল করে না। আমরা এটার জন্য প্রস্তুত। আমাদের কাছে বোলিং মেশিন আছে, যা মানুষের চেয়ে দ্রুতগতিতে বল করে।’’

উইলিয়ামসের এমন মন্তব‌্য কানে গিয়েছে শান্তর। তার মন্তব্য নিয়ে শান্তর পাল্টা উত্তর, ‘‘ম্যাচে যখন নাহিদ বল করবে আর প্রতিপক্ষ যখন ব্যাটিং করবে তখন আপনি তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলে বুঝতে পারবেন যে, নাহিদ রানা কত জোরে আসলে বল করে এবং কতটা এক্সট্রাঅডিনারি।’’

নিজের বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে নাহিদকে প্রথম দেখেছিলেন শান্ত। তার শুরুর সময়টা সম্পর্কে সবটাই জানা বাংলাদেশ কাপ্তানের। একাডেমি মাঠে একসঙ্গে অনুশীলন, এরপর বিভাগীয় দলে খেলা। এখন দুজনের ঠিকানা জাতীয় দল। নাহিদকে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে দেখেছেন শান্ত। শুরুর সময় আর এখনকার অবস্থান, দুয়ের পার্থক্য থাকলেও নাহিদের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ একটাই, ১৪০ কিমির গতির বল।

সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে সতীর্থর থেকে অধিনায়ক শান্তর চাওয়া, ‘‘ওকে আমি অনেক আগে থেকে চিনি আমার ডিভিশন থেকে খেলেছে। যখন ও কিছুই খেলেনি একাডেমিতে প্র্যাকটিস করত তখন থেকেই চিনি। সো তখন থেকে এখন পর্যন্ত একটা মেসেজই দেওয়া হয়েছে, ও যেন ১৪০ প্লাস বল করে। এখন পর্যন্ত এই মেসেজটা ক্লিয়ার এবং আমি আশা করব যে, আগামী কালকে যদি খেলার সুযোগ আসে তাহলে ও যেন ১৪০ প্লাস বল করে।”৬ টেস্টে ২০ ও ৪ ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়া নাহিদ এখনো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কোনো ম্যাচ খেলেননি। সিলেটে প্রথমবার খেলবেন উইলিয়ামস, আরভিনদের বিপক্ষে। প্রথম মুখোমুখিতেই দ্রুতগতির বোলার চমকে দিলে অবাক হওয়ার থাকবে না।

সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ