ইসলাম জিনের অস্তিত্ব বিশ্বাস করে। ইবলিস বদরের যুদ্ধের সময় সুরাকা ইবনে মালিকের রূপ ধরে এসে মুশরিকদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আবু হুরায়রা (রা.) একদিন দেখতে পেলেন, এক ব্যক্তি সদকার মাল চুরি করছে। তখন তিনি তার হাত ধরে বললেন, ‘আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব।’ তখন আগন্তুক বলে যে সে খুব অভাবী। তাই তিনি তাকে ছেড়ে দিলেন।
পরদিন সকালে নবীজি তাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘গতকাল তোমার অপরাধীকে কী করেছ?’ আবু হুরায়রা তাকে ক্ষমা করার কথা বললেন। নবীজি (সা.
এবারও সেই চোর বলে যে সে খুব অভাবী এবং শপথ করল যে, আর আসবে না। পরদিন আবারও নবীজি (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি একই জবাব দেন। নবীজি বললেন, ‘তোমাকে মিথ্যা বলেছে, সে আবার আসবে।’ পরদিন সত্যি সত্যি চোরটি আবার এলে আবু হুরায়রা (রা.) তাকে পাকড়াও করলেন যে, এবার আর ছাড়বেন না।
আরও পড়ুনইবলিস কি জিন নাকি ফেরেশতা১৬ মার্চ ২০২৫চোর যখন দেখল অবস্থা বেগতিক, বলল, ‘আমাকে মাফ করো। আমি তোমাকে এমন কিছু বলছি, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন।’ আবু হুরায়রা (রা.) সেটা জানতে চাইলে চোর বলল, ‘ঘুমাতে গেলে আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে, তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন, যে তোমার সঙ্গে থাকবে, শয়তান সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে আসতে পারবে না।’
আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। নবীজি (সা.) পুরো ঘটনা জেনে বললেন, ‘যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্তু সে সত্য বলেছে। তুমি কি জানো, সে কে? সে হচ্ছে শয়তান।’ (বুখারি, হাদিস: ২,৩১১)
আরও পড়ুনএকদল জিন পবিত্র কোরআন শুনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন২০ নভেম্বর ২০২৩মানুষের ছদ্মবেশ ছাড়াও শয়তান বিভিন্ন প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। যেমন, উট, গাধা, গরু, কুকুর বা বিড়াল। জিনেরা প্রায়ই কালো কুকুর ও বিড়ালের রূপ ধরে। কারণ কালো রং অন্যান্য রঙের তুলনায় অপশক্তি ও তাপ ধারণে অধিক সক্ষম, যা শয়তানের জন্য বেশি উপযোগী।
জিনেরা সাপের রূপও ধারণ করে। অনেক মানুষ তাদের এই রূপে দেখেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তাই রাসুল (সা.) ঘরে থাকা সাপ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন এ কারণে যে, তারা মুমিন জিনও হতে পারে। তিনি বলেছেন,‘মদিনায় কিছু জিন আছে, যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে। যদি তাদের কাউকে দেখো, তা হলে ৩ দিন তাকে সতর্ক করবে। এরপরও যদি তাদের দেখতে পাও, তা হলে হত্যা করে ফেলো। কারণ সেটা মুমিন নয়, শয়তান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,২৩৬)
তবে মুমিন জিনরা নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত করলেও দুষ্ট জিনরা সব সময় মানুষ ও জিনের ইবাদত ভন্ডুল করতে সক্রিয় থাকে। (বুখারি, হাদিস: ৩,৪২৩)
আরও পড়ুনসুরা আর রাহমানে জিন ও মানবজাতি উভয়কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে১০ নভেম্বর ২০২৩উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
‘২ জুন কি পেলাম? কি পাওয়ার কথা ছিল? সালাম প্রশাসন!’- লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি- অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
সোমবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিতব্য হতে যাওয়া সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকালের এ সভায় যেকোনোভাবে যেন ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো পাশ হয়, সেজন্যই তাদের এমন তোড়জোড়।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক
ছাত্রদলের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদ ডুজার
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন চায় না এবং এই পক্ষ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
অনশনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে যে ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়; সুতরাং ডাকসু নির্বাচন দেওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কি কেবল প্রশাসন-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের? কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাসহ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যর্থতাগুলো লক্ষণীয়, সেগুলো ঘোচানোর জন্যই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, ছাত্রলীগ যেভাবে হল নিয়ন্ত্রণ করা, দখলদারিত্ব কায়েম করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিতর ক্ষমতার বলয় তৈরি করত-ঠিক এখনো আমরা এই প্রক্রিয়া দেখছি। আর এই প্রক্রিয়ার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তারাই মূলত ডাকসু নির্বাচনে বাঁধা দিতে চায়।”
এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিন আমিন মোল্লার নেতৃত্বে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন শিক্ষার্থী।
গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ ২ জুনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের ওয়াদা করলে অনশন ভাঙ্গেন তারা। সে সময় অনশন শেষে ইয়ামিনসহ দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছিল।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী