ইতিবাচক মানসিকতায় সর্বদা ফ্রন্ট ফুটে থাকতে চাই: সিমন্স
Published: 21st, April 2025 GMT
স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন ফিল সিমন্সের। বোর্ডের মন জয় করে দুই বছরের জন্য চাকরি পাকাপাকি করেছেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে নতুন পথচলা শুরু হয়েছে তার। কিন্তু নতুন অ্যাসাইনমেন্টের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। সিলেটে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে গেছে প্রথম ইনিংসে। গা-ছাড়া ক্রিকেটে এলোমেলো পারফরম্যান্সে হয়েছে ভরাডুবির পারফরম্যান্স।
‘‘আমরা অনেক বেশি ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করছি। টেস্ট ক্রিকেটে আমরা পিছিয়ে থাকি এবং দলগুলিকে আমাদের দিকে আসতে দেই (আক্রমণ)। এখন আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ব্যাটসম্যানদের জন্য এটা ভালো হয়নি, কিন্তু তারা সেটা করার চেষ্টা করছিল। মাঝে মাঝে সময় লাগে। আমরা এখন এভাবেই ক্রিকেট খেলতে চাই। সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বদা ফ্রন্ট ফুটে খেলতে প্রস্তুত থাকতে চাই।’’
পরিকল্পনামাফিক কাজ হয়নি তা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রধান কোচ। কামব্যাকের সুযোগ থাকায় সেদিকেই তাকিয়ে তিনি, ‘‘গতকাল আমাদের যে কাজটা করার কথা ছিল তা করতে পারিনি। টেস্টের প্রথম দিনে এমন কিছু হয়েছে। আমাদের কামব্যাকের সুযোগ আছে। আমরা ভালো বোলিংও করিনি। আশা করছি আমরা আজ সকালে ভালো শুরু করতে পারব।’’
আরো পড়ুন:
জাতীয় দলের বাইরে রিসোর্স কম, মনে করিয়ে দিলেন সালাউদ্দিন
ব্যর্থতা স্বীকারের সঙ্গে বাস্তবতার আয়নায় সালাউদ্দিন
সিমন্সের কথা রেখেছেন পেসাররা। গতির ঝড় তুলে নাহিদ রানা পেয়েছেন ২ উইকেট। আরেক পেসার নিয়ন্ত্রিত লাইন ও লেন্থ ধরে রেখে বোলিংয়ে করায় পেয়েছেন ১ উইকেট। দুই পেসারের সঙ্গে খালেদ আহমেদও ছড়িয়েছেন দ্যুতি। ধারাবাহিকতা ও পেশাদারিত্ব ধরে রাখার কথা বললেন সিমন্স, ‘‘আমরা সকালে কিভাবে, কোন প্রতিক্রিয়ায় অ্যাপ্রোচ করি তা দেখতে হবে। এটা নিশ্চিতভাবেই ধারাবাহিকতা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে করতে হবে। আমরা যদি ভালো লাইন ও লেন্থ ধরে রাখতে পারি তাহলে নিশ্চিতভাবেই ভালো হবে।’’
প্রস্তুতি এবং সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট সিমন্স, ‘‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে এবং এখানে সুযোগ-সুবিধা ভালো ছিল। যেটা হয়ে গেছে সেটা ফেরানো সম্ভব নয়। আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’’
সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স মন স আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।