ছিনতাইয়ের ছক এক মাস আগে, রিকশাচালককে নিয়ে হয়েছিল মহড়া
Published: 25th, April 2025 GMT
রাজশাহী নগরের ঘোড়ামারা মোড়ে রিকশায় যাচ্ছিলেন এক দোকান ব্যবস্থাপক। পথেই তাঁর চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ছিনতাইকারীরা লুটে নেয় ১০ লাখ টাকা। এ কাজে রিকশাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ছিনতাইকারী চক্রটি এক মাস ধরে ওই দোকান ব্যবস্থাপকের গতিবিধির ওপর নজরদারি চালিয়েছিল। রিকশা চালককে প্রশিক্ষণও দিয়েছে তারা। গ্রেপ্তার রিকশা চালকের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় পুলিশ।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতে গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার রিকশা চালক মাসুম (৩০)। ভুক্তভোগী দোকান ব্যবস্থাপকের নাম দিলীপ কুমার প্রামাণিক।
আরো পড়ুন: রিকশা যাত্রীর চোখে মরিচ ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই
আরো পড়ুন:
গজারিয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ
পরকীয়ার জের, প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে হত্যা
জবানবন্দিতে মাসুম জানান, চক্রটির পরিকল্পনায় তিনি যুক্ত হন অনেক আগে। রিকশা কোন পথে চালাতে হবে, কোথায় থামতে হবে-তা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এমনকি ঘটনার আগে একাধিকবার মহড়াও হয়।
বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, “ঘটনার আগে গত রবিবার মাসুম রিকশা নিয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছিলেন, কিন্তু দিলীপ তার রিকশায় ওঠেননি। ফলে সেইদিন ছিনতাই হয়নি। এক সপ্তাহ পর পরিকল্পনামাফিক ছিনতাই সফল হয়।”
পুলিশ জানায়, ২০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রিলায়েন্স অটো নামে একটি দোকানের ব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার প্রামাণিক শিরোইল বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিল আগের দুই দিনের পণ্য বিক্রির ১৩ লাখ টাকা। দিলীপ কুমার প্রামাণিক মাসুমের রিকশায় ওঠেন। রিকশাটি ঘোড়ামারা এলাকায় গিয়ে একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। সেখানেই মোটরসাইকেলে করে আসা দুই ব্যক্তি রিকশার গতিরোধ করেন। একজন মরিচের গুঁড়া দিলীপের চোখে ছিটিয়ে দেন।
ছিনতাইকারীরা তার পিঠে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। দিলীপ তাদের বাধা দেন। ধস্তাধস্তির সময় দিলীপের ডান হাতের কনুই ও বাঁ হাতের আঙুল কেটে যায়। ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই লাখ পড়ে যায় রাস্তায়। বাকি টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে চেপে দ্রুত সটকে পড়ে ছিনতাইকারীরা।
ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, “চক্রটি জানত, শুক্রবার ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় দোকানের বিক্রির টাকা দিলীপের বাসায় থাকে এবং রবিবার সকালে তিনি সেগুলো নিয়ে বের হন। সেই তথ্য ধরে তারা ফাঁদ তৈরি করে।” ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ নত ই অভ য গ ছ নত ই
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস