বিজয়নগরে অবৈধ মাটিকাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ
Published: 25th, April 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অবৈধ মাটির ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও যুবদলের বহিষ্কৃত নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
মাইনুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দেশ রূপান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত। তিনি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিবের পদ থেকে বহিষ্কৃত মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম মিয়াসহ তাদের ৩০-৪০ জন লোক এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়ায় দল থেকে মোখলেছুরকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম মিয়া গত ৫ আগস্টের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে মাটি কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার পুকুরসহ ফসলি জমি অবৈধভাবে ভরাট করছেন। কাইয়ুমের এই কাজ দেখাশোনা করছেন তাঁর ছেলে মো.
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে ব্যক্তিগত কাজে বিজয়নগর থানার দিকে যাচ্ছিলেন মাইনুদ্দিন। এ সময় বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সামনে মোখলেছুর, কাইয়ুমসহ অন্যরা অতর্কিত সাংবাদিক মাইনুদ্দিনের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন। তাঁর সঙ্গে থাকা ভাগিনা মো. সোহাগ, স্থানীয় মো. শিপনসহ কয়েকজন মিলে চেষ্টা করেও মাইনুদ্দিনকে রক্ষা করতে পারেননি। তাঁদের হামলায় মাইনুদ্দিন মাথার ডান পাশে আঘাত পান। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। মাইনুদ্দিনের মাথার ডান পাশে ছয়টি সেলাই লেগেছে।
আহত সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেল বলেন, ‘মাটি কাটার নিউজ করায় কাইয়ুম, তার ছেলেরা ও ভাইয়েরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়। বাড়ির সামনে পেয়ে লিটন মুন্সি ও কাইয়ুমের নেতৃত্বে তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। কাইয়ুম নিজে আমাকে মেরেছে। তারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। সাংবাদিকতা করা কি অন্যায়?’
আহত সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ভাগিনা সোহাগ মিয়া বলেন, ‘আমরা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। আমাদের মধ্যে থেকে কেউ তাঁদের ‘‘বকা দিয়েছে’’ এই কথা বলেই তারা মামার ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করেছে। ফেরাতে গিয়ে আমরাও আহত হয়েছি।’
একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মোখলেছুর রহমান ও কাইয়ুম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ইউপি সদস্য আনিছ মিয়া বলেন, ‘আমি তো দৌড়ে গেছি।’ আপনি হামলা করেছেন উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘ওরা বাড়ির সামনে এসে ঝগড়া করেছে। আমাদের লোকজনকে মারধর করেছে। সেটা তো কিছু বলছেন না।’
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ ক ম ইন দ দ ন র ব জয়নগর র স মন য বদল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা করে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই নারীসহ তিনজনকে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর মেহেদী, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খোকন হোসেন ও রিংকু বড়ুয়া, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন ও মুজিবুর রহমান। তাঁদের ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন জয়নাল আবদীন (২০), রুজিনা আক্তার (৩২) ও মোসাম্মৎ রূপধন (৪৮)। তাঁরা জয়নগর গ্রামেরই বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, রাতে ওই এলাকায় মোহাম্মদ আলমগীর নামের এক মাদক কারবারিকে ধরতে তারা অভিযান চালায়। আলমগীরকে আটক করা হলে স্থানীয় প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, এ ঘটনায় আহত এসআই তানভীর মেহেদী বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।