দিল্লিতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে ১২০ ফ্লাইট বিলম্বিত, নিহত ৪
Published: 2nd, May 2025 GMT
ভারতের দিল্লিতে প্রবল বাতাস, বৃষ্টি ও ধুলি ঝড়ের কারণে প্রায় ১২০টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। এছাড়া প্রবল বাতাসের কারণে একটি গাছ ঘরের উপর পড়ে এক নারী ও তার তিন সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝড়ের কারণে অনেক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। দিল্লির দ্বারকা এলাকায় একটি বাড়ির উপর গাছ ভেঙে পড়ে। বাড়ির একাংশ ভেঙে এক নারী ও তার তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লাজপত নগর, আর কে পুরম এবং দ্বারকার মতো এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিক জায়গা জলমগ্ন। সকাল থেকেই ওই এলাকাগুলোতে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর আগে তিনটি ফ্লাইট আহমেদাবাদ এবং জয়পুরে ডাইভার্ট করা হয়েছিল। জয়পুরে ডাইভার্ট করা বিমানগুলোর মধ্যে একটি ব্যাঙ্গালোর-দিল্লি এবং আরেকটি পুনে-দিল্লি ফ্লাইট ছিল। ফ্লাইটরাডার অনুসারে, দিল্লি বিমানবন্দরে আসার জন্য গড়ে ২১ মিনিট এবং প্রস্থানের জন্য ৬১ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। দিল্লি থেকে ছেড়ে যাওয়া ২০টিরও বেশি ফ্লাইট দেরিতে চলছে।
অন্যদিকে ভারতের একাধিক বিমান সংস্থা যাত্রীদের বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে তাদের ফ্লাইটের সর্বশেষ অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেছে।
এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া বলেছে, দিল্লিতে চলাচল করা কিছু ফ্লাইট ডাইভার্ট করা হয়েছে এবং বিলম্বে চলছে। যা আমাদের সামগ্রিক ফ্লাইটের সময়সূচির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা এ বিপর্জয় কমানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
এছাড়া তীব্র বাতাসের কারণে গাছ তারের উপর পড়ে যাওয়ার কারণে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি ট্রেন বিলম্বে চলছে। যার ফলে দিল্লিতে রেল চলাচলে প্রভাব পড়েছে বৃষ্টির কারণে।
আইএমডি এর তরফ থেকে সকল বাসিন্দাদের ঘরের ভিতরে থাকতে, গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া এড়িয়ে চলতে এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পরামর্শ দিয়েছে। দিল্লির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে। আগামী তিন দিন বৃষ্টি, বজ্রপাত এবং দমকা বাতাস থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝড় ন হত র জন য ফ ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।