বিরাট কোহলি, এই নামটাই যথেষ্ঠ ক্রিকেট ভক্তদের বিমোহিত করার জন্য। ভারতীয় এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান আইপিএলে নামা মানেই মাঠ দর্শকে টইটম্বুর থাকা, টিভি সেট আর মোবাইলের পর্দায় কোটি-কোটি চোখজোড়া স্থির হয়ে থাকা। এই ৩৬ বছর বয়সী ক্রিকেটারও হতাশ করেন না সচরাচর। শনিবার (৩ মে) চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ম্যাচে ২ রানের রোমাঞ্চকর এক জয় পায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এই ম্যাচে ৫টি রেকর্ড স্পর্শ করেন বিরাট।

শনিবার ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে কোহলি অর্ধশতরান করলেন। এই ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সমান ৫টি চার ও ছক্কায় ৩৩ বলে করলেন ৬২ রান। একই দিনে গড়লেন পাঁচটি নজির। দখলে নিলেন কমলা টুপি।

আরো পড়ুন:

ধোনি-কোহলির শেষ লড়াইয়ে রেকর্ডের বন্যা

বাবরকে ছাড়িয়ে গেলেন কোহলি

আইপিএলে একটি দলের হয়ে ৩০০ ছক্কার মাইফলক ছুঁয়েছেন কোহলি। অবশ্য আগে থেকেই আইপিএলে একটি দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড তার দখলে ছিল। দ্বিতীয় স্থানে আছেন ক্রিস গেইল (২৬৩)। এর পরে আছেন রোহিত শর্মা (২৬২), কায়রন পোলার্ড (২৫৮) এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি (২৫৭)।

গেইলের আরও একটি নজির ভেঙে দিয়েছেন কোহলি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একই মাঠে সর্বাধিক ছয় মারার রেকর্ডটি একখন তার। চিন্নাস্বামীতে কোহলি মেরেছেন ১৫৪টি ছয়। একই স্টেডিয়ামে গেইলের ছক্কা ১৫১টি। পাশাপাশি মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গেইলের ১৩৮টি ছক্কা রয়েছে। এ ছাড়া নটিংহ্যামে আলেক্স হেলসের ১৩৫টি ছয় এবং ওয়াংখেড়েতে রোহিত শর্মা হাঁকিয়েছেন ১২২টি ছয়।

আইপিএলের ইতিহাসে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ফিফটি কোহলির। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে আগে নয়টি অর্ধশতরান ছিল শিখর ধাওয়ানের। শনিবার কোহলির ১০ নম্বর হাফসেঞ্চুরি হাঁকালেন। ডেভিড ওয়ার্নার এবং রোহিত শর্মারও নয়টি করে অর্ধশতরান রয়েছে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে।

আইপিএলের ইতিহাসে কোনও প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রানও কোহলির। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে তিনি করেছেন ১১৪৬ রান। পিছনে ফেলে দিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারকে। অজি ওপেনার পাঞ্জাবের বিপক্ষে ১১৩৪ রান করেছিলেন। এ ছাড়া দিল্লি ও পাঞ্জাবের বিপক্ষে কোহলির যথাক্রমে ১১৩০ এবং ১১০৪ রান রয়েছে।

আইপিএলে এই নিয়ে আট বার এক মৌসুমে পাঁচশর বেশি রান করলেন কোহলি। এই জায়গায় তিনিই শির্ষেই রয়েছেন। টপকে গেলেন ওয়ার্নার (৭) ও লোকেশ রাহুলকে (৬)।

এই পাঁচ মাইলফলকের পাশাপাশি কোহলি আপাতত এই মৌসুমের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (৫০৫)। সাই সুদর্শনকে (৫০৪) টপকে কমলা টুপি এখন তাঁর মাথায়।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক হল ক হল র র কর ড ন ক হল

এছাড়াও পড়ুন:

পেনাল্টি মিসে এশিয়ান দলের বিপক্ষে দ্বিতীয়বার যা করতে ব্যর্থ হলো রিয়াল

রিয়াল মাদ্রিদ কোচ হিসেবে জাবি আলোনসোর শুরুটা প্রত্যাশামতো হলো না। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ড রক স্টেডিয়ামে ক্লাব বিশ্বকাপে কাল রাতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলালের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে রিয়াল। জয়ের সুযোগ কিন্তু পেয়েছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি। শেষ দিকে ফেদেরিকো ভালভের্দে পেনাল্টি মিস করায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় রিয়াল আলোনসোর দলকে।

জ্বরে ভোগায় এমবাপ্পেকে ছাড়াই মাঠে নামা রিয়ালকে ভালোই ভুগতে হয়েছে আল হিলালের বিপক্ষে। নতুন কোচ আলোনসো পয়েন্ট ভাগাভাগি শেষে বলেছেন, ‘কিছু বিষয় ঠিক করতে হবে।’ তবে পুরো পয়েন্ট তুলে নিতে না পারার হতাশা নিশ্চয়ই পোড়াবে আলোনসোকে।

ফুটবলের তথ্য–উপাত্তভিত্তিক এক্স হ্যান্ডল ‘মিস্টারচিপ’ জানিয়েছে, নিজেদের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ৯০ মিনিটের মধ্যে এশিয়ান প্রতিপক্ষকে হারাতে ব্যর্থ হলো রিয়াল। এর আগে ২০১৬ ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে জাপানের ক্লাব কাশিমা অ্যান্টলার্সের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে জিতেছে রিয়াল।

ঠিক করার সুযোগটা অবশ্য আলোনসো এখনো পাননি। ৯ জুন প্রথমবার তাঁর অধীনে দলীয় অনুশীলন করে দলটি। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রে টুর্নামেন্ট খেলতে যায় রিয়াল। আল হিলালের কোচ হিসেবে এটা সিমোন ইনজাগিরও ছিল প্রথম ম্যাচ। আলোনসোর শুরুটা প্রত্যাশামতো না হলেও ১৫ বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের আটকে দিয়ে আল হিলাল অধ্যায়টা ভালোই শুরু করলেন ইনজাগি।

পয়েন্ট ভাগ করে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন ইনজাগি, ‘আমার দলের জন্য এটা ছিল দারুণ একটি ম্যাচ। তারা খুব ভালো খেলেছে। আমরা দল হিসেবে খেলেছি। সবাই মিলে একসঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লড়েছি, এই দলটিকে আমি বিশ্বের সেরা তিনটি দলের একটি বলে মনে করি। আমি খুবই সন্তুষ্ট।’

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে আল-হিলাল। ১৯তম মিনিটে আল হিলালের সালেম আল-দাওসারির ভলি থেকে ফিরতি বলে মারকোস লিওনার্দোর শট অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর রেনান লোডির গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ডান দিক থেকে আল-দাওসারি বেশ কয়েকবার একা ঢুকেছেন বক্সে, তাঁর একটি শটটি পোস্টের কাছ ঘেঁষে গেছে।

প্রথম গোলটি অবশ্য রিয়ালই করেছে। আক্রমণভাগে এমবাপ্পের জায়গায় সুযোগ পাওয়া স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড গনজালো গার্সিয়া গোল করেন ৩৪ মিনিটে। প্রতি আক্রমণে উঠে রদ্রিগোর সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় বক্সে ঢুকে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করেন গার্সিয়া।

বিরতির ঠিক ৪ মিনিট আগে সমতায় ফেরে আল-হিলাল। রিয়াল ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিও বক্সে আল হিলালের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মারকোস লিওনার্দোকে টেনে ফেলে দেন, রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে স্পট কিক থেকে পর্তুগিজ তারকা রুবেন নেভেস গোল করেন।

প্রথমার্ধে গোল পেলেও রিয়াল পরের অর্ধে নিজেদের সেরা ফুটবল খেলেছে। ভাগ্য সহায় হলে রিয়াল এগিয়ে যেত পারত কয়েকবার। ৮৭ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোলটি করতে পারলেও জয় দিয়ে শুরু হতো আলোনসোর। তবে ভালভার্দের পেনাল্টি দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন আল হিলাল গোলকিপার ইয়াসিন বুনু।

ড্রয়ের পর রিয়াল কোচ আলোনসো বলেছেন, ‘প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে অনেক ভালো খেলেছি। প্রথমার্ধে আমাদের অনেক কিছুর অভাব ছিল, আমরা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলাম। ম্যাচে যেভাবে ফিরেছি তা আমার ভালো লেগেছে। আমরা খেলার ছন্দ বদলাতে পেরেছি, নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছি এবং প্রতিপক্ষের অর্ধে বেশি খেলতে পেরেছি।’

আলোনসো দল নিয়ে প্রস্তুতির ঘাটতির কথাও বললেন, ‘আমি জানতাম সময় লাগবে। কিছু জিনিস আমাদের বদলাতে হবে। সেগুলো ঠিক করতেই হবে, এবং আমরা সেই চেষ্টা করে যাব। সবকিছুর জন্য সময় দরকার। আমাদের হাতে ছিল মাত্র নয় দিন, কিছু খেলোয়াড় তো মাত্র তিনবার অনুশীলন করতে পেরেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ