দিনাজপুরের বিরামপুরে চলন্ত ট্রেনে দৌড়ে ওঠার সময় পা পিছলে পড়ে ট্রেনের চাকায় কাটা পড়ে এক ব্যক্তির এক হাত ও এক পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে রাজশাহী থেকে চিলাহাটি অভিমুখী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত আশরাফুল ইসলাম (৪০) ফুলবাড়ী উপজেলার বারাই গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি পেশায় পেয়ারা বিক্রেতা। ব্যক্তিগত কাজে আজ বিরামপুর থেকে ট্রেনে করে ফুলবাড়ী যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। স্থানীয়রা তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

যাত্রীদের বরাত দিয়ে বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী ওহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে চিলাহাটি অভিমুখী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিরামপুর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে থামে। পরে যাত্রী ওঠানো শেষে ১১টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি চিলাহাটির উদ্দেশে বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় আশরাফুল ইসলাম দৌড়ে পেছনের বগিতে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় পা পিছলে তিনি ট্রেনের নিচে পড়ে যান। এতে ট্রেনের চাকায় পিষ্ট হয়ে তাঁর বাঁ হাত ও বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহরিয়ার পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, আশরাফুল ইসলামের শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সময় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বপ্ন পূরণের পথে ফাহমিদুল

ফাহমিদুল ইসলাম। ইতালির পেশাদার ফুটবল ক্লাব ওলবিয়া ক্যালসিওতে খেলা এই তরুণ আগামী ১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য আবারও বাংলাদেশ দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন। ৪ জুন একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। মূল ক্যাম্প শুরু হবে ৩১ মে থেকে। জাতীয় দলের জার্সি এখনও গায়ে না জড়ালেও দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে পরিচিত এই তরুণকে নিয়ে লিখেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ

জাতীয় দলের জার্সি এখনও গায়ে না জড়ালেও ইতোমধ্যে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন ইতালিপ্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলাম। ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে গত মার্চে ক্যাম্পে ডাক পেলেও চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি তাঁর। তখন তাঁকে বাদ দেওয়ায় উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। এবার সুখবর, আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য আবারও বাংলাদেশ দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন ফাহমিদুল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর ক্লাব ওলবিয়া ক্যালসিও, যা ইতালির পেশাদার ফুটবল ক্লাব। ক্লাবটি নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ফাহমিদুলকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর ক্যাম্পে ডাক পাওয়ার কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ জুন। এর আগে ৪ জুন একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল। মূল ক্যাম্প শুরু হবে ৩১ মে থেকে।
সৌদি আরবে ক্যাম্পে ডাক পেয়েও...
গত ২৬ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সৌদি আরবে ক্যাম্পে ডাকলেও পরিকল্পনায় নেই বলে ফাহমিদুলকে বাদ দিয়েছিলেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। তখন তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এবার তিনি বলেন, শুধু ফাহমিদুল নন, শমিত সোমকেও জুনের ম্যাচে রাখার সব চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্নও করছে ফেডারেশন। ন্যাশনাল টিমস ম্যানেজমেন্ট কমিটির মিটিংয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ভুলগুলো নিয়ে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তোপের মুখে পড়েন জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির! ২৬ মার্চ শিলংয়ে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে বাংলাদেশের জেতা ম্যাচ ছিল বলে সবার অভিমত ছিল। সেখানে কোচের দল নির্বাচনে ভুল ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। কোচও তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন। তবে প্রশ্নবাণে জর্জরিত কোচ হয়তো বুঝতে পারেন দলে দরকার ফাহমিদুলকে! 
যাত্রা শেষ হয়নি, একদিন লাল-সবুজ 
জার্সিতে মাঠে নামব
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়ে সৌদি আরবের অনুশীলন ক্যাম্পে থেকেও চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা না পেয়ে ফাহমিদুলকে ফিরে যেতে হয় ইতালিতে। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়। তবে নিজের ফেসবুকে এক আবেগঘন বার্তায় ফাহমিদুল জানান, এখনও থেমে যায়নি তাঁর স্বপ্ন, ভবিষ্যতে লাল-সবুজ জার্সিতে দেশের হয়ে মাঠে নামতে চান তিনি। ইতালির চতুর্থ স্তরের ক্লাব ওলবিয়া ক্যালসিও এফসিতে খেলা ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ ফরোয়ার্ড লিখেন–‘আমি ফাহমিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সকল মানুষের ভালোবাসা, সমর্থন ও উৎসাহের জন্য সত্যিই আমি কৃতজ্ঞ। আমার প্রতি আপনাদের অটল বিশ্বাস আমার যাত্রাপথে বড় ছাপ ফেলেছে এবং যারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সবাইকে মনের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাই।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন স্পষ্টভাবে তুলে ধরে ফাহমিদুল বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল দলে খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম আমি। দুর্ভাগ্যবশত এবার সবকিছু পরিকল্পনা মতো এগোয়নি। তবে আমি বিশ্বাস করি, যা হয় সেটি কোনো না কোনো কারণে হয় এবং আমার পথচলা কোনোভাবেই শেষ হয়ে যায়নি। সৃষ্টিকর্তা যদি চান, একদিন আমি লাল-সবুজের জার্সি পরে মাঠে নামব, দেশ ও সমর্থকদের জন্য আমার সবকিছু উজাড় করে দেব। ততদিন পর্যন্ত, সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
একটু পেছনে ফিরে...
বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম প্রবাসী হিসেবে আবির্ভাব ঘটে জামাল ভূঁইয়ার। ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলা ডেনমার্কপ্রবাসী এ মিডফিল্ডার এখন দলের অধিনায়কও। তাঁর পথ ধরে লাল-সবুজের জার্সিতে ২০২১ সালে অভিষেক ঘটে ফিনল্যান্ডপ্রবাসী তারিক রায়হান কাজীর। গত বছর তৃতীয় প্রবাসী হিসেবে বাংলাদেশ দল সুযোগ মেলে কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত সৈয়দ শাহ কাজেমের। তিনি হলেন সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর ছেলে। কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে হলেও বেড়ে উঠেছেন কানাডায়। তাঁকে আনতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাফুফেকে। এর পেছনে বড় কারণ, কাজেমের জন্ম বাংলাদেশে আর কানাডার হয়ে যুব দলে না খেলা। ২০২৪ সালের ১১ জুন বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ঘটে এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের। তবে হামজা, শমিতের পর বাংলাদেশ দলে এখন বড় চমক ফাহমিদুল ইসলাম। 
স্বপ্ন পূরণের পথে
ঘরের মাঠে অভিষেকের আরও এক ধাপ এগিয়েছেন ইতালিপ্রবাসী তরুণ ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলাম। নিজেকে প্রমাণের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। এবার তাঁর সামনে নতুন করে সুযোগ ­এসেছে। তিনি চূড়ান্ত একাদশে নিশ্চয় জায়গা করে নিজেকে তুলে ধরবেন। সেটিই এখন দেখার বিষয়! 

সম্পর্কিত নিবন্ধ