প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়ার বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
Published: 24th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ আলোচনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে পদত্যাগের ইচ্ছাকে ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ উল্লেখ করেছেন। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচি, বিবৃতি ও ফেসবুক পোস্টে এসব প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গতকাল ফেসবুকে লেখেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না’। পরে এটি তিনি সরিয়ে ফেলেন। ফয়েজ আহমদ লিখেছিলেন, ‘ড.
বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান আছে, এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’
আরেক পোস্টে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’
এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি চাই না: ইকবাল করিম
দেশে এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া। ফেসবুকে তিনি লেখেন, এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না; দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এরূপ অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী অতীতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন করে আরও ভোগান্তি ডেকে আনা ঠিক হবে না।
জনগণের ওপর আস্থা রাখতে বললেন ফরহাদ মজহার
ফেসবুক পোস্টে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার লিখেছেন, ‘ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন। পদত্যাগ করা হবে তাঁর ব্যর্থতা, তাঁর জন্য আত্মঘাতী। কোনো ব্যক্তি বা দল নয়, তাঁর উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান করা, কোনো দল বা গোষ্ঠীর চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা।’
অস্থিরতার কারণ নির্বাচন বিলম্ব: ফারুক
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে বিলম্ব দেশে অস্থিরতার কারণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় অস্থিরতা বাড়ছে: জোনায়েদ সাকি
দেশে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতা ক্রমেই গভীর হচ্ছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ১০ দাবিতে শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি।
সংকট উত্তরণের পথ জাতীয় সনদ ও নির্বাচন: রব
চলমান সংকট থেকে উত্তরণে অবিলম্বে ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজন সরকারের জন্য এ মুহূর্তের জরুরি করণীয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। গতকাল এক বিবৃতিতে একথা বলেন তিনি।
পদত্যাগ সংকটের সমাধান নয়: সাইফুল হক
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, সরকারপ্রধানসহ উপদেষ্টাদের পদত্যাগ বিদ্যমান সংকটের সমাধান নয়। বরং যেসব কারণে অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্কিত হয়েছে, সেসব ইস্যু থেকে তাদের বেরিয়ে আসা উচিত।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির দুই দিনব্যাপী সভার প্রথম দিনে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পদত য গ ফ সব ক কর ছ ন র জন য সরক র গতক ল ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না’
দেশব্যাপী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। শুক্রবার (২৩ মে) নিজের ফেসবুক পেজে ওই পোস্ট দিয়ে তৈয়্যব এ কথা জানান।
পোস্টে তিনি বলেন, ‘‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের (গণতান্ত্রিক রূপান্তর) জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে।’’
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘‘বরং ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে, উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে, দৃশ্যমান অগ্রগতি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে- এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। আমাদের দেখাতে হবে যে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনতার সম্মতিতে ক্ষমতায় এসে প্রফেসর সাফল্য দেখিয়েছেন।’’
বিশেষ সহকারী বলেন, ‘‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান আছে, এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমি মনে করি, সরকারকে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে আলোচনায় বসতে হবে, নিয়মিত বসে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত চাইতে হবে। কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়।”
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, ‘‘দরকারি প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল-মে’র কোনো সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি, তবে এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। এসময়ে সব যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে, করতে হবে জুলাই সনদ। তবে ডিসেম্বর থেকে জুনে দেওয়া রোডম্যাপ মতে নির্বাচনের এক্সাক্ট ডেট (সুনির্দিষ্ট তারিখ) ঘোষণার এখতিয়ার শুধুমাত্র স্যারের। স্যারের এখতিয়ার অন্য কেউ হাইজ্যাক করতে পারবে না।”
তিনি বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট-২৫-এ আমরা জাতীয়ভাবে দুই মাস জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উদযাপন করব, ইনশাল্লাহ। এবং আগস্টের মধ্যেই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায়টি আলোর মুখ দেখতে পাবে বলেও আশা প্রকাশ করি। ইনশাআল্লাহ আমরা হারবো না, আমাদের হারানো যাবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। প্রফেসর ইউনূস জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।’’
ঢাকা/তারা/এস