তৌফিকা করিমের সাড়ে ৫৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ, মামলা অনুমোদন
Published: 24th, May 2025 GMT
জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৫৬ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার ২৯৮ টাকার সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আইনজীবী তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এ কথা জানান।
তৌফিকা করিমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল, তৌফিকা করিম সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আস্থাভাজন ও বিশ্বস্ত। তিনি তদবির-বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বলেন, তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশনের অনুমোদনক্রমে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তৌফিকা করিমের নামে ৫৯ কোটি ২৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৪ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর বিপরীতে বৈধ আয়ের উৎস রয়েছে মাত্র ২ কোটি ৬২ লাখ ৭ হাজার ৭২৬ টাকা। এই হিসাবে জ্ঞাত আয়ের বাইরে অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
দুদক আরও জানিয়েছে, তৌফিকা করিমের নামে থাকা ৮৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২০১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা জমা এবং ১৭২ কোটি ৬২ লাখ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৩৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকার আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আরও পড়ুনআইনজীবী তৌফিকা করিমের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ২৩ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইপিবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ডলারে ঘুষ নিয়েছেন সংস্থাটির এক উপপরিচালক, এমন অভিযোগে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ডলারে ঘুষ নেন ইপিবির এক কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা তদন্ত করতে এরপর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইপিবি। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ওঠে আসে।
তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইপিবি। দুদক সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য একটি দল গঠন করে এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আমলে নিয়েই দুদক আজ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই দুদকের তিন সদস্যের একটি দল আমাদের কার্যালয়ে আসে। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছি। বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।’
ইপিবি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইপিবির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫০ ডলার করে নেওয়া ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়, চীনের কুনমিংয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত একটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া।
দুদকের সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের পে–অর্ডার দিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা, ইপিবির এক উপপরিচালক আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এত দিন সেগুলো নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। দুদক সরেজমিন ইপিবি কার্যালয়ে এসে পে-অর্ডারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তবে কিছু উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।