হিলিতে কাস্টমসের কর্মবিরতিতে স্থবির আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য
Published: 26th, May 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারি বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে টানা দুইদিনের কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর। ফলে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। গত ১৪ মে থেকে তাদের এই কর্মবিরতি চলছে। তবে কয়েক ঘণ্টা করে কর্মসূচি চললেও গত শনিবার ও রোববার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়। আজ সোমবারও পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনে কাস্টমস কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মকর্তা শুন্য শুল্ক স্টেশন। অনেকে স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয়ের পাশে অবস্থান করছেন। কোনো কাজকর্ম করতে দেখা যায়নি।
বন্দরের আমদানিকারকরা বলেন, ‘কাস্টমস অফিসারদের কর্মবিরতির ফলে বন্দরে আমাদের আমদানি করা পণ্য খালাস করতে না পারায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে।’
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতি একযোগে সারাদেশে পালিত হচ্ছে। এই কর্মবিরতিতে সহমত পোষণ করে হিলি স্থলবন্দরেও পালিত হচ্ছে। রোববার বিকেলে ঢাকায় এনবিআর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোন ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়ায় সোমবার পূর্নদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। আন্তর্জাতিক যাত্রী সেবা ব্যতীত আমদানি-রপ্তানি করা পণ্য শুলাকয় ও পরীক্ষণ বন্ধ থাকবে। তবে যাত্রীসেবা চালু থাকায় হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
এদিকে বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি বন্দর সূত্রে জানা যায়, এমবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতিতে হিলি কাস্টমসে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বেশ কিছু আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে শুল্কায়ণ জটিলতায় পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
বন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, গত দুই দিনের কর্মবিরতিতে আমদানি করা নিত্যপণ্য, মসলাজাতীয় পণ্য বোঝাই শতাধিক ট্রাক বন্দর অভ্যন্তরে শুল্কায়নের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক জানান, কাস্টমস কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করায় বন্দরে শতাধিক ট্রাক পণ্যবাহী ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে করে আমদানি করা পণ্যের জন্য অতিরিক্ত বন্দর ভাড়া ও গাড়ি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে পচনশীল পণ্য নষ্ট হওয়ায় আশঙ্খা দেখা দিয়েছে। এতে করে ব্যাবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। আর দু’এক দিন এভাবে চললে অনেক ব্যাবসায়ীকে মূলধন হারিয়ে পথে বসতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ক স টমস র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে
খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।
হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় নাসম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।
খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’
পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা